প্রেমিক: ১৩৪৫-৪৬

এমন সময় এক মানুষকে হাতে পাওয়া গেল
যাকে ধ’রে পৃথিবীর বাজারের কাছে
ভবঘুরে ভিড়দের বলা যায়: তোমাদের চেয়ে
অধিক আবহমান ধাতু বেঁচে আছে।

সারা-দিন কবি যার মুখের ভিতরে
সাধারণ দার্শনিক যার প্রণিধানে
নিজেদের, পৃথিবীকে, ব্যাপ্ত পৃথিবীর
বাস্তবতাকে আরও ভালো ক’রে জানে।

এ না হলে ঘড়ির ঘণ্টার শব্দে
ভোরবেলা জেগে উঠে রোজ
ঈষৎ বিবর্ণ সব মুখোশকে দেখা যায় শুধু
মেজে-ঘ’ষে মানুষের মতন সহজ।

অথবা আত্মস্থ সব লোকগুলো ব’সে আছে আপন আসনে
যত দিন টিকে আছে পৃথিবীর থাম
তাহাদের কারু কোনও সংশয় নেই
পেতে পারে নিজ-নিজ পিতার প্রণাম।

অথবা অসংখ্য কোটি লোক যেন কেঁদে যায়
কান পেতে মনে হয় অগণন লোক যেন হাসে
সমান্তরাল দু’টো বিচ্ছেদের রেখা
কেবলই মিলিত হয় মুহূর্তের জাদুর বাতাসে।

ধর্মভীরু প্রাণ তার বাঁধানো দাঁতের জ্যোতি নিয়ে
কাপুরুষ লোক তার ইস্পাতের কারখানা খুলে
অবিশ্বাসী অনর্গল হুন্ডি চালিয়ে
ঘেমে গেল;- কেবল প্রেমিক তার হৃদয়ের ভুলে

মাথায় প্রকাণ্ড টাক গজাতেছে প্রাঞ্জলতায়
চোখে তার নিরাময় সুড়ঙ্গের মতন শূন্যতা
প্রতিভাত হয়ে ওঠে অফুরন্ত আলোকের মধ্যাহ্ন তিমিরে
মাইক্রোফোনে বেজে ওঠে কংগ্রেসাদি ক্যাম্পের কথা।