পৃথিবী আজ

প্রকৃতি থেকে ফসল জল নীলকণ্ঠ এল:
সময়পাপচক্র থেকে বাহির হ’ল ব্যথিত নিঃসহায়।
সবের পথে শতাব্দীর এই রাত্রির ব্যাপকতা
প্রশান্তি নয়- ক্রমেই বেশি স্পষ্টতা জাগায়।

সময় এখন চার-দিকেতে ঘনান্ধকার দেখে
বলছে: ‘নগর নরক ব্যাধি সন্ধি ফলাফল
জীবনের এই ত্যক্ত সন্ততিদের প্রলাপ আলাপে পরিণত
হ’ল কি প্রায়?- নক্ষত্র নির্মল?’

হয়তো হ’ল:- অন্তত আজ রাত্রি একা অল্প সময়ের
ভিতরে শুভ অনুধ্যায়ী সময়দেবীর মতো
প্রাণের প্রয়াস দেখাতে গিয়ে চলতি ছেদে ব্যর্থতায়
হয় নি নিহত?

নদী পাখি প্রহরী জ্ঞান-বিজ্ঞানীরা সব
প্রেমিক? তবু সারাটা রাত এ্যাম্বুলেন্সের গাড়ি
শব কুড়িয়ে ফিরছে অন্ধকারে;
চন্দ্রে সূর্যে রক্ত তরবারি?

মানব কেমন স্বভাবত
এই কথা কি ঠিক
দেশ-সময়ের মানুষমনের সহজ প্রকাশে
করুণা স্বাভাবিক?

আমার চোখে ভেসে ওঠে করুণা এক নারী:
হাত দু’টো তার ঠাণ্ডা সাদা- তবুও উষ্ণতা
প্রিয়ের মতন। কাম তবু আজ প্রিয়তর নিরিখ পৃথিবীর:
স্থূল প্রগলভ বিষয় ব্যবহার ও কথা

সবের চেয়ে সুখের বিষয় ভেবে
রন্ধ্রে ঋণে উন্মাদনায় পুরুষার্থ ভাব;
জীবনে আরেক গভীরতরভাবে
ঢুকেও তো আজ তা অ-প্রেমই স্বভাব।

পিরামিড ও এ্যাটম আগুন অধীর প্রাণনার
উৎসারিত রাষ্ট্র সমাজ শক্তির রচনায়
প্ল্যান কমিশন কনফারেন্সের বৃহৎ প্রাসাদে
হঠাৎ মহাসরিসৃপকে দেখা যায়।

সত্যযুগ । শারদীয়, ১৩৫৭