প্রগাঢ় নীলিমায়

অনেক জাহাজ যায় দ্রাক্ষা আর সোনা আর নারী নিয়ে সমুদ্রের শেষে
নতুন পৃথিবী তারা চিনিতেছে ঢের দূর রৌদ্রের ভিতর
চিলের মতন আমি ঠোঁটে ক’রে আনিয়াছি খড়
হে সোনালি চিল-রানি, উঁচু গাছে- পৃথিবীর আদিতম পরিচিত দেশে
জানি না কি আমি, প্রিয়, তোমার হৃদয়ে আছে নিঃশেষতমের পরিচয়
যে-সমুদ্র মানচিত্রে ধরা প’ড়ে নীল জল করিবে না ক্ষয়
বিজ্ঞানের আবিষ্কারে যে-নক্ষত্র ম’রে গেছে সবই, প্রিয়, তোমার হৃদয়

আমার চোখের মণি- কোকিলের ডিম যেন- গর্ভে তার লুপ্ত গাঢ় ছানা
বিম্বিতেছ;- তুমি শুধু হেঁটে যাও, কথা কও, আপনার কাজ কর, প্রিয়
অথবা অনেক দূরে পান করিতেছ তুমি জীবনের বিমূঢ় পানীয়
জল নয়;- দেহ শুধু পান করে; আমার এ-প্রেম ছাড়া অন্য প্রেম তোমার অজানা
তোমারে চিনেছি পরে এই কথা ছাড়া আর সব কথা শব
তুমি আমি ম’রে গেলে কিছু তবু হবে না নীরব
আমাদের দু’ জনারে এক ক’রে আমিই করিব অনুভব

উৎসুক মানুষ এসে কানাকড়ি দিয়ে যদি তোমারে করিতে চায় ক্রয়
(শরীরের সব স্বাদ কানাকড়ি)- কপোতীর মতো যদি তার হাতে দাও তুমি ধরা
তার যব খাও যদি, জল খাও- কপোতীর ঘর তবু নয় চবুতরা
ঘাড় হেঁট ক’রে ঘাসে খুদ খায়- তবু জানে নীল জ্যোতির্ময়
মাথার উপরে তার রয়ে গেছে রৌদ্রে- জ্যোৎস্নায়
আমিও কপোত হয়ে ঘুঙুর বেঁধেছি রাঙা পায়
তবু জানি আমরা বিজোড় নই, জোড় নই- আমি নীল তোমার প্রগাঢ় নীলিমায়।