প্রথমে অ্যানা’র কথা মনে পড়ে

প্রথমে অ্যানা’র কথা মনে পড়ে আজ
অ্যানা নামে কোনও এক স্বদেশি মহিলা
অথবা অনেকে তাকে অ্যানি ব’লে ডেকে যেত বটে
বিচিত্র ফ্লামিঙ্গো হতে গিয়ে হয়েছে এ-বার হাড়গিলা
হয়ে যেন হারায়েছে, মনে হয়, স্বীয় অধিকার
কখন প্রথম জন্ম হল মেয়েটির- যদিও সে বাংলার মা’র
জনক-রাজার মতো প্রবীণ পিতার
লাঙ্গল মাটির মুখে সহসা ডিমের খোলায় ঠেকে গিয়ে
সে হয়েছে পুরুষের ঔরসের জন্ম ডিঙিয়ে
এক জীবনের আড় ভেঙে সে সে-সব কথা ভুলে
তার পর সেলাই, বই, লেখা, কাজ নিয়ে ঝুঁকে
সারা-দিন মাছি মশা মারি ডাঁশ এক রাশ বাতাসের সঙ্গে মিশুকে
হয়ে যেত সোরগোল তুলে জানালার খড়খড়ি ঘেঁষে
সামলায়ে নিতে হত কাপড়চোপড়
তবুও প্রেমিক নেই
তবুও প্রেমিক নেই দেশে
আজীবন মড়িদের মতো নিরুত্তর।
মেয়েটিও- আজ রাতে কোনও এক পুরুষের নিম মেয়েলি
শুনে সে জাগার আগে- টের পাবে নিজেই দেয়ালা রক্তিম।
নিজের মনকে চোখঠার
দিয়ে ক্রমে স্থির- আরও স্থির
হয়ে সে বেড়েছে পৃথিবীতে
বিনুনি বেড়েছে আর বিনুনির প্রয়োজনে ফিতে।

তবুও কী কাজ নিয়ে ব্যস্ত থেকে যায় সারা-দিন
যেন সব মানুষের জন্ম, মৃত্যু, সময়ের ফাঁকে
একটি রমণী নিজ শরীরকে অধিকার ক’রে আছে ব’লে
তাহার মাথার চুল ধীরে-ধীরে পাকে
তবুও কোথাও তার নিঃসংশয় প্রতিশ্রুতি আছে
পোলিটিক্স- শিশুদের বই- নীতি- অর্থনীতি প্রভৃতি বিষয়
বোবার মতন মুখে সঞ্চারিত হয়ে এই মেয়েটির কাছে
সারা-দিনমান তবে সুব্বাসেরিয়া’র মতো অভিনয়?
সাঙ্গ ক’রে তার পর পুনরায় রাতে
সুব্বাসেরিয়া’র মতো হত হৃদয় জুড়াতে?

সহসা জানালা দিয়ে হেমন্তের ঠান্ডা আকাশে
বিকেলের সাদা চাঁদটার দিকে চেয়ে
বেড়ালের মনে হয় হয়তো সে নিজেই মানুষ।
সাদায় কালোয় মেনি বেড়ালের মতো অই মেয়ে
অথবা বেড়াল সে-ই
মেয়েটিই অবিকল মানুষের মতো।
কোথাও প্রেমিক নেই
(তবুও সে পরমায়ু, একলাই হয়েছে ব্যাহত।)
মেয়েটিকে বাঘের মেনির মতো মনে করে তবুও সকাল-
সেই ক’রে পরসাথে ঘুমোতেই টের পেল কে মানুষ আর কে বেড়াল।