রাত্রি ও ভোর

শীতের রাতের এই সীমাহীন নিস্পন্দ গহ্বরে
জীবন কি বেঁচে আছে তবে!
ডানাভাঙা নক্ষত্রের মতন উৎসবে
আঁধারের ভিতরে কি ঝরে

কেবলই স্ফূলিঙ্গ অন্ধ সংক্রান্তির মতো?
বহুদিন ক্ষমাহীন সময়ের ভিতরে সে অনেক জ্বলেছে।
আছে, তবু তুমি নেই, তাই তো দাহন ভেঙে গেছে।
মৃত নক্ষত্রের গন্ধ ক্রমেই হতেছে পরিণত

অন্ধকার সনাতনে।- সৃষ্টির প্রথম উৎসারিত পটভূমি
তারই অন্তিমের কথা? অন্তহীন মোজেইকে আলোকের গোলকধাঁধায়
কেউ প্রিয়া- কেউ তার অনির্বাণ প্রিয় হ’তে চায়;
ঝ’রে যায়,- দূর মৃগতৃষ্ণিকার মতো দীপ্ত তুমি।

এখন ভোরের বেলা মনে হয় তুমি সাদা যূথিকার মতো।
তেমনই পবিত্র স্বাদ তোমার শরীর-শিখা ঘিরে।
কোথাও বিষয় খুঁজে তোমাকে দেখেছি রৌদ্রে লুকানো শিশিরে;
সৃষ্টির প্রথম ভোর থেকে অবশেষে আজ এই পরিণত

শেষ ভোর, শেষ রোদ, শেষ ফুল, অন্তিম শিশির।
মীন-কেতনের দিন জন্মান্তরে কেটে গেছে;- আজ প্রতিসারী
আরেক প্রয়াণে উৎস;- একটি মেঘের মতো চ’লে এসে তারই
নীলিমায় মিশে যেতে- থেমে- শুনেছি, বলেছ তুমি স্থির

মেঘশান্তি প্রকৃতির;- মানুষ তা হারায়ে ফেলেছে।
চারি দিকে সময়ের সকল বিশাল মরুভূমি
বলয়িত নগরীর সমাজের সভ্যতার কলঙ্ক-সুন্দর
মৃগতৃষ্ণিকায় লয় পেয়ে গেলে স্থির তুমি- স্থিরতর তুমি।

দিগন্ত। শ্রাবণ ১৩৫৪