রাত্রি অনিমেষ

কেমন এক পরিচ্ছন্ন গভীর বাতাস ভেসে আসে।
অঘ্রান রাত্রির অগণন জ্বলন্ত নক্ষত্রের আলোয়
সমস্ত পৃথিবী তার জলঝর্ণার- নগ্ন নারীহস্তের নির্মলতায়
নিঃশব্দে উৎসারিত হয়ে উঠছে আজ।
পৃথিবীকে আকাশের মতন মনে হয়;
আকাশকে সময়ের মতন;
কোথায়ই-বা উদয় হয় নি সে- কোথায়ই-বা যায় নি?
সমস্ত আধো-আলোকিত সৃষ্টির বুকের উপরে
যেন কার দীর্ঘ নারীঅঙ্গের ছায়া পড়েছে
মাঠে- খাদে- বস্তির মরণে- মিনারে-
শান্তি-অশান্তির কলরোলে- নগরীর জ্বলায়- মানুষের চোখের ঘুমে।

আকাশে তারা কম।
বাতাসে- সাদা মেঘের ফাঁকে একটি কি দু’টি নক্ষত্রে আলোকিত রাত্রে
কোনও সার্থবাহের উটের পাশে কি এই ছায়া-
আমার জীবন থেমে আছে, অতএব তাকে নিমেষনিহত ক’রে?
কোনও ক্যাম্পে ঘুমিয়েছিলাম যেন সমস্ত হেমন্তকাল;
জেগে উঠে দেখলাম কোথাও কেউ নেই আর;
কোনও শব্দ নেই,
কোনও উট নেই;- উটের ছায়া রয়েছে মরুভূমির
অঘ্রানের আলোশক্তির শান্ত অপরিমাণ রাত্রে;
কি এক গভীর বাতাসে প্রতিটি নক্ষত্র নিভে নিভে
আবার জ্ব’লে উঠছে সেই নারীর হাতের নিবিড় মোমের মতো।