রাত্রির বাতাসে

যখন চলিয়া গেছি ওপারের দেশে,-
তুমি যদি একা থাকো,- ডাক দাও তুমি যদি এসে
সবুজ বনের পারে
নক্ষত্রের রাত্রি আঁধারে
আমারে- আমারে যদি ডাকো!
যেই দিন অন্ধকারে একা তুমি থাকো,
মুখখানা ক’রে থাকো নিচু,
যেই দিন পৃথিবীর কিছু
ভালো আর লাগে না তোমার,
যেই দিন মাথা নুয়ে,- যেই দিন ঘাড়
নিচু হ’য়ে আসে,-
এক বার চেয়ে দেখো রাত্রির আকাশে,-
নক্ষত্রের পানে!
এক বার অন্ধকারে- বাতাসের গানে
কান পেতে থেকো,-
নক্ষত্রের পানে চেয়ে দেখো!

আমারে ডেকেছো তুমি- শুনিয়াছি আমি!
আমারে ডেকেছো তুমি বনে মাঠে নামি,-
নক্ষত্রের তলে
আমারে ডেকেছো তুমি,- রাত্রির সাগরের জলে
সেই সুর ভেসে
আমার এ-দেশে
আসিয়াছে;
রাত্রির বাতাসের কাছে
বলিয়া দিয়েছে কোন্ কথা,-
শুনিয়াছি!- রোজ রাত্রে আমি শুনিবো তা!
যদিও অনেক দূর সমুদ্রের পারে
থাকি আমি,- রাত্রে- অন্ধকারে
আমারে যেতেছো তুমি ডাকি,-
শুনি আমি,- যদিও অনেক দূর নক্ষত্রের দেশে আমি একা থাকি!

সেই দিন-রাত্রির কথা,
হৃদয়ের সেই স্বচ্ছলতা
ঢেউয়ের মতন;
তোমার আবার যদি মনে পড়ে,
কোনও রাত্রে কাঁদে যদি মন
আর-এক রাত্রির কথা ভেবে,
যদি তুমি একা থাকো,- কে সান্ত্বনা দেবে
খুঁজে তুমি পাও না ক’ আর,-
এক-বার রাত্রির আঁধার,
নক্ষত্র- আকাশ
আর এই ধূলো- মাটি- ঘাস,-
এ-সবের পাশে
এসো তুমি,- রাত্রির বাতাসে
শুকনো পাতা উড়ে যায়,- তারই সাথে জেনো
সে এসেছে,- তারে তুমি চেনো!