রাত্রির সঙ্গমে

গেল সে নদীর পারে সন্ধ্যার আক্রমণে বীতশ্রদ্ধ হয়ে:
কোথাও স্থিরতা যদি থেকে থাকে পৃথিবীতে তবে এই জলের ভিতরে
সেখানে প্রাসাদ তবু দেখা গেল- মার খেয়ে আপামর সময়ের হাতে
বিবর্ণ- বিবর্ণতর হয়ে তবু অন্ধকারে চায় না ফুরাতে
আলোকবর্ষের পথে যে-সব নক্ষত্র ম’রে গেছে
সেই সব প্রেতাত্মার সাথে তার গম্বুজ (ভ্রুকুটিল) আন্দোলন করে।

যেন মরণের পরে- নিচে- বৈতরণী রাত্রির সঙ্গমে
দেখা দেয় নারকীয় নৌকার অন্ধকার কাঠ- পাল- তবুও উজ্জ্বল এনামেল
নাবিকের নিরঙ্কুশ দাঁত থেকে উদ্ভাসিত হয়ে বড়ো রাতে
নিজেরই আলোর মতো ঘোষণায় ধরা পড়ে- পারে না পালাতে
যত দূর শুয়ে আছে লক্ষ কোটি বর্গমাইল অন্ধকার নীর
তত দূর ষড়ন্ত্রময় এই আলোকের রগড়ও অঢেল।

কোথাও স্থিরতা নেই- শান্তি নেই- সময়ের হে যমনিয়ম
পাতালের আরও কোন্ তলে
সে কোন্ আঁধারে গেলে পরিতৃপ্ত বিবেকের দেখা পাব আমি
অথবা প্রিয়ের দিকে চেয়ে তাকে বলা যাবে: ‘সব পরিভ্রমণের শেষে
সম্পূর্ণ সন্তোষ নিয়ে এ-বার ফিরেছি আমি দেশে
আমার সিঁড়ির নিচে কুকুর ঘুমায়ে আছে- ম’রে গেছে- আমাদেরও হৃদয়ের স্বাদ
বহমান সময়কে মেরে ফেলে মৃত কুকুরের মতো দায়ী?’