সাদা জ্যোৎস্নায়

সেইখানে সাদা জ্যোৎস্নায় থাকে কয়েকটি নারী
আর স্তব্ধ চবুতরা প্রাঙ্গণে আছে
মাঝে-মাঝে বাতাসের থেকে আসে দু’-একটি যবাঙ্কুর-জাতীয় পুরুষ
এত নিস্তব্ধতা দেখে ফিরে যায় পাছে
তাই তার চার জন পাঁচ জন সুবর্ণের পিলসুজে ফিরোজা রঙের আভা জ্বেলে
ব’সে থাকে ক্রমশই বৃদ্ধতর- বৃদ্ধতর বয়সের কাছে।

এক দিন তাহাদের ডৌলে-মেধে অকৃত্রিম রূপ ছিল ব’লে
অনেক স্বর্গীয় গল্প জ’মে গেছে পেটে
১৩০০ সালের যুবা- পোলিটিক্স’এ- গন্ধকের মতো যেত জ্ব’লে
প্রণয়ে আহত হয়ে সুতোর মতন যেত কেটে
১৩১৫ সালে যুবকেরা বৃশ্চিকের মতো যেত নিজের নিতান্ত বিষে ম’রে
আবার সিন্ধুর পারে ভূমাকে চিবায়ে খেত স্বচ্ছ কাঁকড়ার মতো হেঁটে

কোথাও মায়াবী আছে- নারীর স্তনের মতো হাতে তার নিবিড় ববিন
সুতো ছেড়ে চলিতেছে আমাদের সকলের সাথে
১৩২৫ সালে পৃথিবীকে মনে হল যেন একচক্রা- যেন ক্রিট
তবুও সুতোর খেই আমাদের হাতে
সহসা গভীর ভাবে বিজড়িত হতে গিয়ে
আমরাই পেরেছি জড়াতে

তার পর জীবনের দিনগুলো দ্বেপায়নের কূট ইশারার মতো যেন ধোঁয়া হয়ে আসে
রাজহংস জলকে ডিঙিয়ে গিয়ে কোন গৃহস্থের ঘরে খায় আজ ধান
(বিস্ময়সূচক নয়) যখন মাছের চোখ চেয়ে থাকে জলের উপর দিয়ে অস্পষ্ট আকাশে
ব্রহ্মার ডিমের ‘পরে যখন ভিটের ঘুঘু পেতে থাকে কান
মানুষের আত্মা- তারে পতঞ্জলি নিয়ে যাক
মার্কস আর আচরণতন্ত্ব তারে দেয় নি কি উদান অপান?

হে আদিম সৃষ্টির মহাভূত-রাশি
মানুষের টিটকারি ফিরায়ে দিতেছ তার দন্তের দৃঢ় এনামেলে
হাতুড়ির মতো ঘায়ে- হাতুড়ির মতো ঘায়ে
যখনই সে ঊর্ধ্বে ওঠে- আচরণ-তৃপ্তি নিয়ে ব্রহ্মা’র ডিমের মতো বড়ো বাতি জ্বেলে
তোমরা মোমের মুখে চাখড়ির মতো শুষ্ক আলোক তবুও
সেই সব লাক্ষার হাড়গোড় সিলমোহরের ছাঁচে ঢেলে

এই সব গল্প শুনে- গল্প শুনে-
কড়ির মতন দৃঢ় থুতমির মুখোমুখি স্তব্ধ হয়ে থাকে অশ্বঘোষ
হয়তো গৌতম বুদ্ধ- বিম্বিসার ম’রে গেছে
হয়তো এখনও পূর্ণ হয়ে আছে চণ্ডাশোকের রাজকোষ
(এই সব) নারীদের মুখে চেয়ে মনে হয় অনেক বিশুদ্ধ হয়ে তবুও সোনালি থাকে খড়
মেধাবী মুখের মিস্ত্রি কেটে ফেলে চির-দিন ব্যবহৃত সময়ের ম্লান মুদ্রাদোষ।