সারা-দিন দিবারৌদ্রে

সারা-দিন দিবারৌদ্রে আকাশে কোথাও মেঘ নেই
সূর্য তার ভয়াবহ সুস্থতায় জ্ব’লে
চেয়ে দেখে সুসজ্জিত দেশ এক ছড়ায়ে রয়েছে
কোনও দিন শৃঙ্খলার এক-চুল ব্যতিক্রম হলে

সাজানো সৈনিক সব ন’ড়ে উঠে উজ্জ্বল শরীরে
ভোরবেলা জেগে উঠে সুশৃঙ্খল কাজের নির্দেশ
দিয়ে যায় পরিচ্ছন্ন মানুষেরা অগণন অষ্টাবক্রদের
এ-রকম ব্যক্তিগত পরিষ্কার দেশ

তবুও যাদের দেশ সেই সব জ্ঞানপাপী পথিকের ভিড়
ঘুরে যায় সময়ের মাঝ-পথ দিয়ে
ডান দিকে একটি শতাব্দী তার দৈত্যের শরীর নিয়ে শুয়ে
বাম দিকে অপরটি দানবীর মুখ নিয়ে রয়েছে দাঁড়িয়ে

মৃত্তিকার অন্ধ সত্যে গ্রাসাচ্ছাদন আছে তবু
গভীর বিশ্বাসে ওর মানুষেরা চোখে চোখ এঁটে
সারা-দিন নিজেদের সোনালি ফসল কেটে- তবু
ফতুর হতেছে ফালতু চিপটেন কেটে

গভীর আক্ষেপে তারা মৃতোপম শতাব্দীর পানে চেয়ে থেকে
পিতা-পিতামহদের রীতি, ব্যাজস্তুতি, ভয়, মৃত্যু, নষ্ট ফসল
গণনার ভয়াবহ লোভে ধরা প’ড়ে
কেবলই হতেছে উচ্চুঙ্খল

হেমন্তের পাতা সব উড়ে আসে নদীর উপরে
তেমনই প্রতুল শব্দে নিজেকে প্রকাশ ক’রে যায় জনমত
তার পর স্তব্ধ হয়ে প’ড়ে থাকে মাটির উপরে
রুদ্ধশ্বাস ক’রে রাখে সন্ততির, সন্ততির সন্ততির আগামী জগৎ

তবুও চতুর্দিকে নির্বাচিত, নিরুপম ভাষা
অনেক স্বর্গীয় শব্দ ভয়াবহ ভাবে জেগে আছে
জীবিত জন্তুকে তারা জ্ঞানময় ক’রে নিতে গিয়ে
প্রমাণিত ক’রে রাখে সূর্যের কাছে

মৃত ব’লে; দীর্ঘ জানালার কাছে দণ্ডায়মান
মাঝে-মাঝে দেখা যায় কার যেন বিশিষ্ট শরীর
মাঝে-মাঝে দেখা যেত- ইদানীং অতি-কদাচিৎ
হয়তো আবিষ্ট স্তম্ভ ভেঙে গেছে আত্মপ্রতীতির।

মৃত ব’লে; জলের বিম্বের মতো সবের জীবন
অন্য বিম্বদের সাথে যদি ব’লে যেত কথা
তার পর ম’রে যেত। সময়ের সুনিয়মে তবুও তাহারা
পেয়েছিল মানবের মতো মহীয়ান অভিজ্ঞতা।