শান্তি চাই

শান্তি চাই;- সিদ্ধান্তের বিচরণে নয় আর- কল্পনার সংক্রমণে জেগে
হৃদয়েরে কেন্দ্র ক’রে স্বপ্ন সব উত্তরিবে নক্ষত্রের থেকে
স্থাণুর জীবন পাবো; অপরিমেয়ার চুমো স্থির হয়ে চোখে র’বে লেগে;
শব যেন শুয়ে আছি দুই হাত বুকে থুয়ে- অন্ধকার পিরামিড আছে যেন ঢেকে
মৃত্যু নাই- ধ্যান আছে- পাশে খেজুরের ছায়া টের পাই লেগে আছে দুগ্ধ-সাদা মেঘে;
বিষাক্ত পৃথিবীর সব চারি-দিকে ফাটিতেছে বোমার গর্জনে
সোনালি জরি’র কাজ নিয়ে তবু অবিচল কারিগর লিপ্ত আছে মনে।

এই সব নিষ্ঠা প্রেম চাই আমি- ভবিষ্যৎ উদ্বোধিবে- মনে হয় আমার সে নির্জন বনিতা
কোনও এক নগরীতে হয়তো-বা চাবি দিয়ে খুলিতেছে বহু দিন রুদ্ধ ছিল যেই পক্ষীশালা
অথবা তাহার দেহ ঢের আগে শ্রাবস্তীতে হয়ে গেছে চিতা;
রাতের আভায় আজ মশার গুঞ্জন শুনে ঘুরিতেছে বালা
টেবিলে কাচের পাত্র ভ’রে গেল সাদা জলে- জানি আমি তারই হাতে ঢালা;
প্রসারিত তরঙ্গের উৎসারণ ধীরে-ধীরে কেন্দ্রে ফিরে আসে
তত বেশি দ্যোতনায় শেষে সে মিলন পায় যত সে প্রসার ভালোবাসে

আজ রাতে হয়তো সে নয় আর মানুষীর যোনির সম্ভবা
হয়তো সে আভা হয়ে দাঁড়ায়েছে রাত্রি আর মোর ব্যবধানে
আজ রাতে- বিস্তৃত পবিত্র রাতে প্রেমিক নয় ক’ পুরুরবা;
উত্তেজনা নাই কিছু- শুধু মন কবেকার ধুলো-ধূসরিত সুপ্ত নাশপাতি-ঘ্রাণে
শান্ত হয়ে জুড়াতেছে;- হে ধূসর ধুলিরাশি, হে উজ্জ্বল নক্ষত্রের সভা;
ও গো পাখি, স্বর্ণ-পাখি,- বাইজেনটিয়াম, গ্রীস, ভারতের, চীনের উদ্যানে
কবে তুমি এসেছিলে, আবার আসিবে কবে, ও গো স্বপ্ন, চামর-ব্যজনে
বিরক্ত এ-পৃথিবীরে প্রেম দিয়ে বিজড়িবে- শান্তি দিয়ে তোমার নিবিড় নির্বাচনে।