সিংহ এক ব’সে আছে

সিংহ এক ব’সে আছে- কোনও এক আমাদের অগোচর রাতে
কালো মেষশাবকের সাথে
ক্ষরিছে বিভিন্ন আভা কেশরীর গূঢ় চোখ থেকে
‘হে মেষ-শাবক, আমি চিনি না তোমাকে
তোমাকে চেনাতে যদি- তবে আমি এই সৃজনের
গুপ্ত চর হয়ে আরও গাঢ় সুড়ঙ্গের
আরও কী গভীরতর অন্ধকার-
পেতাম কি ঘনতর মৃত্যুরে টের?
সবুজ জলের মতো তোমার আসন্ন চোখ কারে চায় বলো
সেই সব পিতৃলোক আমার গুহার পাশে হাড় হয়ে গেল
কোনও এক নির্বাচিত অসূয়ার ক্ষুধা
মেটাতেই হবে ব’লে চ’লে গেল
যাদের গন্তব্য পথ মিষ্টি-ভয়ঙ্কর ক’রে প্রকাশিল
সাদা ভোর- শালফুল- মহুয়ার সুধা?
তোমার চারটি ঠ্যাং যেন কোনও রহস্যের জননীর দেওয়া হাতে কালো মোজা এঁটে
এই স্থির হিমানীর রাতে
আমারে বিপুল ফাঁকি দিতে চায়।
সমস্ত পেটের ভুঁড়ি নেচে-নেচে উঠিতেছে- খাঁজে-খাঁজে জীর্ণ তামাশায়
তবুও জননী সেই শ্রদ্ধাহীন- উদাসীন-
আমাদের প্রহসনে যবনিকা ফেলে দিয়ে
আধাে-ঘুমাতেছে যেন
আমাদের সব-শেষ দিকনির্ণয়ের যন্ত্রে তারে খুঁজে-খুঁজে
হয়তো-বা নাক পাব, চুল পাব, যোনি পাব তার
তবুও মহুয়াফুল- নীলিমার মিষ্টি-ভয়ঙ্কর পথে মোরা প্রজাগিব
প্রহসনে রূঢ় হয়ে- মূঢ় হয়ে- সমীচীন- সাধু হয়ে শুধু
শীর্ষে রেখে সময়ের বালুঘড়ি-নির্বাচিত কোনও সততাকে
সবুজ জলের মতো তোমার আসন্ন চোখ তবু-
হে মেষজননী, আমি চিনি না তোমাকে।’