শিরীষ-গাছে পেঁচা

শিরীষ-গাছে পেঁচা ডাকছে বুঝি-
অন্ধকারের ভিতর কেমন শিরশির মধুরতা
আবার হেমন্ত এল
আমার জীবনের ধূসর বয়স
এই কুয়াশা ও রাত্রি-নিঝুমের মধ্যে জেগে থাকতে ভালোবাসে…

মুখুজ্যে-জমিদারদের পুত্রবধূ পঁচিশ বছর হয় মারা গেছে
একুশ বছরের নারীর দেহ নিয়ে
শ্মশানের দিকে যেতে-যেতে সেই শায়িতার দু’টো নিষ্ফল, করুণ, হলুদ পা
গিরিমাটির রঙের মতো হলুদ- নিষ্ফল পা-
কেমন প্রচুর- অথচ বিবর্ণ নিঃস্বার্থ গাঢ় অপ্রচুর…
শ্মশান পর্যন্ত আমি যাই নি আর।

হেমন্ত, পৃথিবীতে- জান না তুমি- কত নিষ্ফলতা ও বেদনার জিনিস রয়েছে
সেই অভিজাত মৃতার ছবি ছাড়া!
কিন্তু বেদনা: বেদনা; হেমন্ত: হেমন্ত;
হিজলের জঙ্গল, পেঁচা ও কুয়াশার আঘ্রাণের ভিতর
কেমন এক গভীর নিস্তব্ধতা এসেছে আজ।
শহরের পথের রুগ্ণ দুঃখিতদের বেদনা আজ
প্রগতিপ্রাণ কবি বা প্রবন্ধকারদের জন্য নয়
নতুন পণ্ডিত বিদ্যাসাগরদের জন্য রেখে দিয়েছি।