শীতরাত

এই সব শীতের রাতে আমার হৃদয়ে মৃত্যু আসে;
বাইরে হয়তো শিশির ঝরছে, কিংবা পাতা,
কিংবা পেঁচার গান; সে-ও শিশিরের মতো, হলুদ পাতার মতো।

শহর ও গ্রামের দূর মোহনায় সিংহের হুঙ্কার শোনা যাচ্ছে-
সার্কাসের ব্যথিত সিংহের।

এ-দিকে কোকিল ডাকছে- পউষের মধ্যরাতে;
কোনও এক দিন বসন্ত ফিরবে ব’লে-?
কোনও এক দিন বসন্ত ছিল, তারই পিপাসিত প্রচার?
তুমি স্থবির কোকিল নও? কত কোকিলকে স্থবির হ’য়ে যেতে দেখেছি,
তারা কিশোর নয়,
কিশোরী নয় আর;
কোকিলের গান ব্যবহৃত হ’য়ে গেছে।

সিংহ হুঙ্কার ক’রে উঠছে:
সার্কাসের ব্যথিত সিংহ,
স্থবির সিংহ এক- আফিমের সিংহ- অন্ধ- অন্ধকার!

চার-দিককার আবছায়া-সমুদ্রের ভিতর জীবনকে স্মরণ করতে গিয়ে
মৃত মাছের পুচ্ছের শৈবালে, অন্ধকার জলে, কুয়াশার পঞ্জরে হারিয়ে যায় সব।
সিংহ অরণ্যকে পাবে না আর
পাবে না আর
পাবে না আর।
কোকিলের গান
বিবর্ণ এঞ্জিনের মতো খ’সে-খ’সে
চুম্বক-পাহাড়ে নিস্তব্ধ।
হে পৃথিবী,
হে বিপাশা-মদির নাগপাশ,- তুমি
পাশ ফিরে শোও,
কোনও দিন কিছু খুঁজে পাবে না আর!