শব্দব্রহ্ম

এখন সকল দিকে কেবলই শব্দব্রহ্ম: নিজস্ব শরীরে।
কখনও তাহাকে কেউ টের পায় এক চুল অতিরিক্ত অহঙ্কারে- সমুদ্রের ‘পরে
ময়ূর ও মোরগের ঝুঁটি নিয়ে উঠেছে সে মনীষীর জাতে
কিছু নিচে সমুদ্রের কাকচক্ষু তরঙ্গকে ছিঁড়ে
টর্পেডো’র দুই ধারে দুধের মতন সাদা এমন স্বর্গীয় জল ঝরে
মদের পিপের দেশে শুয়ে যারা নিজেদের নাম গেছে ভুলে
হঠাৎ লোলুপ হয়ে- ফেটে যায় ভীষণ শব্দের অপঘাতে।

নীরব নির্দিষ্ট রাত চেয়ে কেউ কোথাও জ্বালাতে চায় মোম
মাথায় প্রসিদ্ধ টুপি এঁটে নিয়ে- জানালায় দু’টো হাড়, নৃমুণ্ডকে রেখে
ঘুমোবার আগে কিছু ছেঁদো কথা লিখে যাওয়া প্রয়োজন প্রতি মানুষের
তিন ধনু দূরে-দূরে যদিও এখন এয়োরোড্রোম:
ব্ৰহ্ম নিজে; তবুও এ-সব শব্দে কান গেছে এত বেশি পেকে
কলমের ধ্বনি ছাড়া মানুষ এখন আর কাকে পাবে টের?

এখন সকল কথা স্তব্ধ তার- এখন সকল গান চুপ
এক চুল বাতাসের আওতায় এখন হৃদয়
ক্রমেই অভিজ্ঞ হয়- এখন সকল প্রেম নিঃশেষিত বোতলের মতো
অন্ধকারে মাতালেরা বসেছে টেবিল ঘিরে- এক জন মেনকার মতো অপরূপ
অলীক আলেয়া তবু তাহাকেই সব-চেয়ে বেশি ছিন্নমস্তা মনে হয়
অথবা সে নারী নয়- স্তনের সাক্ষ্যে যদি রমণীকে চিনে নিতে হয় প্রথমত।

গোলকধাঁধায় ঘুরে- ঘুরে- ঘুরে- অববাহিকার পথে নৃত্য শুরু হয়
পৃথিবী পাতাল স্বর্গ সকলের চেয়ে ঢের দূরে
রমণী পুরুষ শিশু পায়জামা শেমিজ বডিস পেন্টালুন
সহসা অগ্নির মাঝে কৃকলাসদের মতো নিবিড় বিস্ময়
অনুভব ক’রে যায় মুহূর্তেই মৃগশিরা তারকায় উড়ে।
বম্বার মনে ভাবে: তার হাতে মৃতেরা কি গভীর নিপুণ।