শহর বাজার ছাড়িয়ে

শহর বাজার ছাড়িয়ে আমার দৃষ্টি পড়ে নক্ষত্রদের দূর আকাশের পানে
যখন আমি রাতের বেলা দেখি-
নগরীর ঐ পুরুষ নারী কী চেয়েছে কোথায় যাবে- কিছুই জানে না
চারি-দিকে প্রেম ও প্রাণের আততায়ী দীক্ষা অপশিক্ষা আগুন উত্তেজনার ঢেউ
ভাঙছে আমার শতাব্দীকে- স্বাতীতারার মতন তবু কেউ
নিজের স্বচ্ছ কক্ষ থেকে একা
এই পৃথিবীর সে কোন্ অধম শক্তিগুলোর ‘পরে
ভালো হবে ব’লে শিশির-ফোঁটার মতো ঝরে।

তোমার আসা-যাওয়া কথা আদান-প্রদান কুশীলবের দূর বলয়ের থেকে
আমার পানে নারী, তুমি আজকে রাতে আবার তাকায়েছ
কী যে কবে বলতে চেয়েছিলাম তোমায় আমি
কী যেন ঋণ- সে কোন্ সিঁড়ির ঘুরুনিতে মাঠে অন্ধকারে
আজকে মনে নেই-
নিয়েছিলাম? আমায় তুমি ফিরিয়ে দিয়েছিলে?
দুইটি তট; কিন্তু তবু একটি নদী দুইটি তট মিলে।

রোদ যেখানে হরিণ মেঘের মৌমাছিদের সেই পৃথিবীর তুমি
সরোবরের পথে বুকের ঐশী জিনিস ঢেকে
নীলকণ্ঠ পাখির গুঞ্জরণে চমক ভেঙে চেয়ে দেখে
আমার কণ্ঠবিষের পানে তাকিয়েছিলে।
চারি-দিকে রক্ত ক্ষতি গ্লানির কাছে ঋণ
লাভ ক’রে আজ শ্রীলাভ করার দিন
মানুষ ও তার আ-চলমান নিশ্চয় মৃত্যুর
এ-পার গঙ্গা ও-পার গঙ্গা- মাঝখানেতে চোরাবালি আশ্বাসে ভরপুর
আজ আমাদের পৃথিবী- এই শতাব্দী এ-রকম।

তোমার কারণ ক্রান্তি তবু আমায় অভয় দিল
তোমার আলো আঁচল আভাস শরীর
নীল আকাশে শরৎ এলে সূর্য জ্যোৎস্না হরিয়ালের কথা
জাগিয়ে দিয়েছিল-
পাখি-হন্তারকের প্রাণে- কামের চেয়ে প্রেমে তাহার দু’ চোখ পূর্ণ ক’রে
অন্ধকারে তারা নদী সাকোরখোরার ঝিরঝিরানির মতন তোমার চোখের মণি, চুল,
শরীর শান্ত দয়ালুতায় জেগে উঠে পরীর, মনে হয়,
জানে দয়ার মীমাংসা- দান, শরীরদান নয়।

তবুও কেন আমার পানে তাকিয়ে আছো একা
এগারো বৃহস্পতি বারো সূর্যে ভরা আজকে পৃথিবীতে
চারি-দিকে আর্তি অব্যাহতি তলব সুখবরের দিনে
খাতক কেন আটকে প’ড়ে আছে তবু মহাজনের ঋণে?
ক্রূর আমি? তিক্ত তুমি? কিংবা স্বীয় স্বীয়
প্রাণের বিনিময়ে সবই সত্য, স্থির ও কাকচক্ষু জলে কি পূরণীয়?

ঢের তাপিত জেগে উঠে ঐ মহিলার বলয়-আলোর পানে
কিশোর যুবা প্রবীণ মনে তবুও নতুন উত্তেজনা নিয়ে
কী চায়, আহা,
সে কোন্ নতুন আলোর গ্রন্থি সন্দীপনের তারা?
আমার এ সব কুশল প্রশ্নে চকিত হয়ে শচী অহল্যারা
বলছে হেসে, সেই রমণী এইখানেতেই আছে
এসো শরীর অথবা তার ব্যাধির অতীত মৃগনাভির কাছে
রাত্রিবেলা ঘাসের শিষে একটি শিশির ফোটে

চার-দিকে তার নক্ষত্র ও শিশির লাখো লাখো
প্রেম কি তাদের গণিত স্থির ক’রে দেবার সঁকো?-
শুধাতেছে তোমার পানে তাকিয়ে মহীয়সী
সময় সূর্য সাগরপারে নতুন দিনে দণ্ডায়মান তুমি
দ্বৈপায়নের মতন অন্ধ মহাশূন্য দেখছ নাকি আলোর প্রতিসারী
প্রেম তবুও নিজের প্রতিভারই
মতন আরেক আঁধার আলো সময়-বীমার শূন্য নিঃসময়,
কৃষ্ণা, তোমার আঁধার ঘিরে শাড়ির মতো নিজেকে মনে হয়।

প্রতিক্ষণ। মাঘ ১৩৯১