সময়ের করুণ সন্তান

এরা সব সময়ের করুণ সন্তান
(যত আমি হৃদয়কে দিয়ে যাই ধিক
আমার প্রাণের চেয়ে বেশি ক’রে এরা
এখন এ-সময়ের আশ্চর্য প্রতীক)

সকালবেলার সুশ্রী আলোকের থেকে
যাদের ওঠার কথা নদীর মতন প্রয়োজনে
ধীরে জেগে উঠেছিল সে-রকম নিরপেক্ষতায়
নির্নিমেষে- অকৃত্রিম দিঙনির্ণয়নে

অষ্টাদশ শতকের প্রাসাদের থেকে
সর্বদাই দেখা দিত আজকের খবরাখবরে
সন্তানেরা- উপনিষদের সূক্ত ভালো লেগেছিল;
হয়তো-বা মৈত্রেয়ীর মনের ভিতরে

আধেক জীবন তারা রেখে গেছে বিষয়ের মতো
আধেক জীবন তবু অষ্টধাতু পেতে চায় মূর্তির মতন
কখনও লৌহের স্বাদ অনুভব করে
কখনও সোনার নিপীড়ন

তবুও পাখিকে আমি উড়ে যেতে দেখি
সূর্যকে মাঝ-পথে রেখে দিয়ে- বৈকুণ্ঠের পানে
হৃদয়ে ব্যুৎপত্তি তার জেগেছিল- ডায়ালেকটিকের
তাই উড়ে- উড়ে চ’লে গেছে যথাস্থানে

তার পর থেকে সব মরালের ছিন্ন ডানা
দিবা-রৌদ্রে- নীলাকাশে প’ড়ে আছে পাখি
হাতের নিকটে এক মরুপথে আকাশকে দেখে
তবুও আকাশ ব’লে মেনে নেয় তা কি?

কে তাকে নিষেধ করে- প্রকৃতি ও আমি
বার-বার আমাদের হাতের দর্পণ
তার দিকে প্রসারিত ক’রে তবু দেখি
আরও যদি করা যেত সম্প্রসারণ

আমাদের দর্পণকে। ডানাহীন পাখির করুণা
ডানাহীন পরিসীম পাখির বিনয়
প্রকৃতির বয়ঃসন্ধি (সে এখনও ঢের বড়ো হবে)
এ দু’ জন সুহৃদের মুখোমুখি আমার হৃদয়

আমারও হৃদয় ঢের গাঢ় হয়ে যাবে
পাখির মস্তিষ্ক হবে সমীচীন আরও
তবুও ত্রিভুজ এক বানায়েছি তিন জনে মিলে
হে নর্তকী নিখিলের, কটিদেশে তুলে নিতে পার?