সমুদ্র

সবুজ মাটির পথে ব’সে আমি দেখিতে চেয়েছি জল,- জলের নিঃশ্বাস
হৃদয়ের রক্তে আমি মিশাতে চেয়েছি এই মাটির ধুলোর পথে ব’সে;
অনেক আকাশ দেখে যেই জল জেগে আছে আকাশের মতন সাহসে,
তাহার হৃদয় থেকে যেই জল খুলে ফেলে গেছে এই পৃথিবীর ফাঁস,
পূর্বের সমুদ্র থেকে যেই জল চলিতেছে পশ্চিমের সমুদ্রের পানে,
উত্তর সিন্ধুর থেকে যেই জল ছুটিতেছে দক্ষিণের সিন্ধুর আহ্বানে,
পৃথিবীর সব শক্তি শেষ হ’লে তবুও হৃদয়ে যার রহিবে ক্ষমতা,
নক্ষত্রে উজ্জ্বল হয়ে যেই জন অন্ধকারে নক্ষত্রের সাথে কয় কথা,
আলো আর অন্ধকারে আবিষ্কৃত দ্বীপ- অন্তরীপ ভ’রে গেছে যার গানে।

যেই দ্বীপ দেখি নাই,- যেই অন্তরীপে গিয়ে কোনও দিন পৃথিবীর কেউ
অন্ধ বাতাসের খেদ শোনে নাই সমুদ্রের পারে ভিজা পাহাড়ের ‘পরে,
পৃথিবীর ছায়া গিয়ে পড়ে নাই যেইখানে অন্ধকার ছায়ার গহ্বরে,
সিন্ধুর সাপের মতো ফুলে উঠে সেইখানে তুমি গিয়ে তুলিয়াছ ঢেউ।
বৈকালের অন্ধকারে তীক্ষ্ম হয়ে ফিরিয়াছ তুমি ভিজে বাতাসের সাথে!
মানুষের মত কেঁদে একা-একা যে পাহাড় বৈকালের হাওয়ার আঘাতে
তারে তুমি কাঁদায়েছ;- তাহার বুকের ‘পরে ফোঁপায়েছে শিশুর মতন
তোমার বুকের ঢেউ;- একা-একা মানুষের মত সেই সমুদ্রের মন
নিঃশ্বাসের মত ভেসে ফিরিয়াছে পাহাড়ের পাশে-পাশে অন্ধকার রাতে-।