সন্ধ্যার নদীর পারে

সন্ধ্যার নদীর পারে দাঁড়ায়ে ছিলাম একা কবে
নাহরের ঘন বন দাঁড়ায়েছে নিকটে নীরবে

বুলবুল মুনিয়ার ছোটো পাখা মুছে গেছে কখন আকাশে
নদীর হলুদ জল ধীরে-ধীরে ঘরে চ’লে আসে

নাহরের বন থেকে একরাশ জ্যোৎস্না লয়ে মুখে-চোখে তার
হঠাৎ হরিণ এক- বনের সে মৃগ নয়- স্বপ্ন কল্পনার

ছবি এক- ছুটে এলো- নেমে গেল শীত-স্তব্ধ নদীর ভিতরে
দু’ ধারে জ্যোৎস্নার জলে হীরা ঝ’রে পড়ে

(গায়ের দু’ ধারে তার মুক্তার হার যেন ছিঁড়ে-ছিঁড়ে পড়ে
ঢেউয়ে-ঢেউয়ে;)

শীতল ফেনায়;- জানালার মতো তার প্রসারিত চোখে
ভয়ের প্রদীপ নড়ে অন্ধকার বেগুনী আলোকে

সাঁতরায়ে চলিতেছে জ্যোৎস্নার ধানসিড়ি নদী
কেন ভয়? কই যায়?… জানিতাম যদি

সুস্বাদ বনানীমাতা দেহের ভিতর থেকে তার
জন্ম তারে দিয়েছিল- ভালো তারে বেসেছিল সুঘ্রাণ নক্ষত্র-অন্ধকার

প্রশস্ত বিরাট শিঙ নাহরের শাখার মতন
নাহর দাঁড়ায়ে আছে শান্তি স্বপ্নে- ভয়ে বেদনায় তবু মন

ভরে কেন হরিণের?… হলুদ নদীর জল হয় কেন লাল?
গুটায়ে নিতেছে জ্যোৎস্না আর-এক বার তার মুক্তার জাল

হরিণের রাঙা মাংসে ভরা…
ধানসিড়ি নদীটির মেয়েলি মায়ের-হাতে প’ড়ে গেল ধরা।