স্টিমের জাহাজ

স্টিমের জাহাজ এই ১০,০০০ টন ভারি
লাল রৌদ্র- নীল জল- জীবনের অবিরাম আদমশুমারি
টিন-সৈন্য জেগে উঠে দাঁড়ায়ে রয়েছে সারি-সারি-
আমি তবু টিন নয়?- আমি এত কাল্পনিক কেন?
আকাশের সুর শুনে হৃদয় ভরিয়া ওঠে কারু পোষা ক্ষুধাতুর শিম্পাঞ্জি’র মতো যেন
(শিহরনে যেন)

ঢের বুড়ো- বহু সন্ততির পিতা হয়ে গেছি
খিদিরপুরের এই ঘরখানা কোনও এক ঘর্ঘর জাহাজের মতো যেন
জাহাজ কোথায় যাবে? চীন? মহাচীন? হিন্দুস্থান- পেরু?
বরফ-চাঙ্গড়ে ভরা কোনও এক মেরু
কোনও এক পেঙ্গুইন-দ্বীপ আমার এ-জীবনের
ছাপর খুনের যেন সৈনিক বুড়ো বাবুরাম শিং
ধবল জুলফি নিয়ে তার

আমারে সেলাম ঠুকে বলিবে আবার
এই নাও তোমার সে
তবুও সে-সব দিন ফিরে পেয়ে কী-বা লাভ বাবুরাম শিং
আফগান যুবা এক বাংলা’র পাড়াগাঁয় বিক্রি করে
জাফরান হিং
চেরিবাগানের সেই ওহারু’র প্রণয়ীরা
চিনে কুলি-মেয়েদের টেনে নিয়ে অক্টোপাশের মতো ধ’রে
জ্যোতির্ময় আলোর কণায় জেগে উঠে নিভাতেছে সব; নিভিতেছে

হে উজ্জ্বল উষা ধাত্রী,
চায়ের বিবর্ণ স্টলে রোজ ভোরে আমাদের ছেড়ে দিয়ে তুমি
শ্যামল করিতে আছ কোনও দূর জনহীন গোবি-মরুভূমি
চেয়ে দেখি
পেয়ালার ফাটলের কালো দাগে যেন এক অন্ধকার গলি
কোনও দিকে চ’লে গেছে;- আমাদের স্তব্ধ চোখ…
পুরোনো জ্যোতির চেয়ে আরও ঢের শীর্ণতর মোমের মতন ধীরে জ্বলি
অনেক করুণা খুঁজে পাবে
নতুন সাম্রাজ্য আর বিলুপ্ত নদীর খাতে তখন কি জ্যামিতির রেখা হয়ে যাবে।