স্থবির-যৌবন

তার পর এক দিন উজ্জ্বল মৃত্যৃর দূত এসে
কহিবে: তোমারে চাই- তোমারেই, নারী;
এই সব সোনা রূপা মসলিন যুবাদের ছাড়ি
চ’লে যেতে হবে দূর-আবিষ্কারে ভেসে।

বলিলাম; শুনিল সে: ‘তুমি তবু মৃত্যুর দূত নও- তুমি-‘
‘নগর-বন্দর ঢের খুঁজিয়াছি আমি;
তার পর তোমার এ-জানালায় থামি
ধোঁয়া সব;- তুমি যেন মরীচিকা- আমি মরুভূমি-‘

শীতের বাতাস নাকে চ’লে গেল জানালার দিকে,
পড়িল আধেক শাল বুক থেকে খ’সে।
সুন্দর জন্তুর মতো তার দেহকোষে
রক্ত শুধু? দেহ শুধু? শুধু হরিণীকে

বাঘের বিক্ষোভ বুকে নিয়ে নদীর কিনারে- নিম্নে- রাতে?
তবে তুমি ফিরে যাও ধোঁয়ায় আবার;
উজ্জ্বল মৃত্যুর দূত বিবর্ণ এবার-
বরং নারীকে ছেড়ে কঙ্কালের হাতে

তোমারে তুলিয়া লবে কুয়াশা-ঘোড়ায়।
তুমি এই পৃথিবীর অনাদি স্থবির;-
সোনালি মাছের মতো তবু করে ভিড়
নীল শৈবালের নীচে জলের মায়ায়

প্রেম- স্বপ্ন- পৃথিবীর স্বপ্ন, প্রেম তোমার হৃদয়ে।
হে স্থবির, কী চাও বলো তো-
সাদা ডানা কোনও এক সারসের মতো?
হয়তো সে মাংস নয়- এই নারী, তবু মৃত্যু পড়ে নাই আজও তার মোহে!

তাহার ধূসর ঘোড়া চরিতেছে নদীর কিনারে
কোনও এক বিকেলের জাফরান দেশে।
কোকিল কুকুর জ্যোৎস্না ধূলো হয়ে গেছে কত ভেসে
মরণের হাত ধ’রে স্বপ্ন ছাড়া কে বাঁচিতে পারে?