তাহাদের সারবত্তা ছিল ঢের

তাহাদের সারবত্তা ছিল ঢের
কিন্তু তারা চ’লে গেছে দেয়ালের অই পারে
যখন মঙ্গলটাক উড়ে আসে
বিচক্ষণ সন্ধ্যার বাতাসে
ইটের স্তূপের থেকে
কংক্রিটের থামের উপর
বিষয়বিম্বের বিষ শেষ বার ঝাড়ে;-
তাদের পেয়েছি আমি টের

তারাও পেয়েছে আজ ঘর
যেখানে বিবর্ণ ঢিলে খড়
বাঁশের সিলিং আছে ঢেকে
তার পর রোদে জলে যাবে সব ক্ষ’য়ে
ভিড় করে এক-সার হাড়গিলা।
গ্রন্থের ভিতরে কোনও সুস্নিগ্ধ জঙ্গল
উডকাট’এ: জিনে নেবে দারুচিনি-কাননের টিলা
তারা সব মৃত্যু, বায়ু, মোম, সোনা, মায়াবান শিখা
ব্রহ্মার ডিম্বে আমি কান পেতে সহসা শুনেছি:
বিচূর্ণ বিম্বের মতো ক্ষীণ কোলাহল
অইখানে স্তূপীকৃত ইট
আর স্তম্ভের কংক্রিট
আর যারা গঠন করেছে এই কলভাষী গিজে
(অথবা এ-শব্দব্রহ্ম সমুত্থিত হয়েছিল নিজে)

আরও ঢের ইতিহাস খাবে।
হারাবে না তবু হিতাহিত।
বুঝে নেবে এইখানে তাঁতি আর জোলা
ঐখানে প্ৰমারা খেলার হারজিত
ঐখানে সারা-রাত নেশায় চেঁচায় হরবোলা
হাতের তেলোর পরে জল, যেন নিবিড় সাগর
সেখানে ভাসিছে ঢের ময়ূরপঙ্খির সদাগর
হয়তো-বা মৃত্তিকার থেকে তারা পুলস্ত্য’কে লুফে নেবে
ভূস্তরের গর্ভে আছে- সেই সব এষণার নিখুঁত স্বাক্ষর
যত দূর দেখা যায় বিকালের পার
রয়েছে অনেক পরকলা
অতীত মানবদেহে অনেক উদার ছিল
মনীষায় ছিল লোষ্ট্রভার
মাঝে-মাঝে শলার কাঠিতে তবু
লাফায়ে গিয়েছে সব সিমিয়ান শোলা

ঐখানে কেরোসিন-কাঠ দিয়ে বাক্সের-গাড়ি
ছুতার বানায়ে দিয়ে চ’লে গেছে কবে
সন্ধ্যায় গর-গর-গর ক’রে তাই খাদ্য উপনিবেশের বাড়ি
চ’লে যায় কুষ্ঠরুগি-সচেতন ব্যক্তির মতো অনুভবে
পথে দেখে জাদুকর তরবার গিলে
অথবা অঙ্গার জ্বেলে- শয্যা পেতে দেয় করতালি
ভিড় ক’রে আর-এক বার সব ভাই বোন রাষ্ট্রভাষী বারাঙ্গনা মিলে
চেয়ে দেখে।- অনেক চীবর নিয়ে পৃথিবী ঘুরিছে পুরুজবে
সকলেরই এই শ্রেষ্ঠ আস্তৃত নিখিলে
গভীর- গভীর রাতে সেই কথা টের পেতে হবে।