তার পর সেই মৃতা

তার পর সেই মৃতা টের পেল- অন্ধকারে- প্রিয়ের বালিশে
মাথা আর নাই তার;- সৃষ্টির ভস্মের ঘ্রাণ মৃত্তিকার গর্ভে আছে মিশে
আমের কঠিন শাখা কেটে ফেলে তার সাথে ফাল্গুনের বোল-স্নিগ্ধ যুবক পল্লব
কেটে-কেটে পৃথিবীর বায়ুভুক জীবনেরা শান্ত রাতে জ্বালায়েছিল যে তার শব
মনে প’ড়ে গেল তার- মনে উজ্জীবিত হল সোনালি খড়ের ছবি- গোলাজাত শস্যের ঘ্রাণ
গোরুর-গাড়িরা সব- ফাল্গুনের জ্যোৎস্নায় অতিকায় পতঙ্গের প্রাণ
আহরিছে পৃথিবীর ঘাস খেয়ে- নক্ষত্রের জল খেয়ে ধীরে
রাইসর্ষের খেতে এত রাতে যে-সব হলুদ জীব কাঁপিছে সমীরে
দুই ধনু দূরে যেই ইলিশমাছের জালে সমাকীর্ণ নদীর দেবতা
হিরার প্রতিভা জ্বেলে মৎস্যভোজী অগণন শিকারির কাছে রূপকথা
জ্ঞাপন করিতে আছে- তাদের হৃদয় যাতে প্রীত হয়- গভীর নরম
হয়ে যায়- হিংসা ভুলে তাদের হৃদয় যাতে হয় স্বপ্নক্ষম
কারণ পৃথিবী ক্রমে স্বপ্ন চায়- প্রেম চায়- ত্রয়োদশী চাঁদের- নদীর-
তবু এই অন্ধকারে মাথায় বাঁদরটুপি কালো-কালো বামনেরা করিতেছে ভিড়
পাশ ফিরে সেই মৃতা টের পেল- মাথা তারা ভেঙে পড়ে প্রিয়ের বালিশে
ঘুমায় আবার তবু- শেষ বার রৌদ্র পাতা বিড়ালের মখমলে মিশে।