তার স্থির প্রেমিকের নিকট

বেঁচে থেকে কোনও লাভ নেই,- আমি বলি না তা।
কারও লাভ আছে- সকলেরই;- হয়তো-বা ঢের।
ভাদ্রের জ্বলন্ত রৌদ্রে তবু আমি দূরতর সমুদ্রের জলে
পেয়েছি ধবল শব্দ- বাতাসতাড়িত পাখিদের।

মোমের প্রদীপ বড়ো ধীরে জ্বলে- ধীরে জ্বলে- আমার টেবিলে;
মনীষার বইগুলো আরও স্থির- শান্ত- আরাধনাশীল;
তবু তুমি রাস্তায় বার হ’লে- ঘরেরও কিনারে ব’সে টের পাবে না কি
দিকে-দিকে নাচিতেছে কী ভীষণ উন্মত্ত সলিল।

তারই পাশে তোমারও রুধির কোনও বই- কোনও প্রদীপের মতো আর নয়,
হয়তো শঙ্খের মতো সমুদ্রের পিতা হয়ে সৈকতের ‘পরে
সেও সুর আপনার প্রতিভায়- নিসর্গের মতো:
রূঢ়- প্রিয়- প্রিয়তম চেতনার মতো তারপরে।

তাই আমি ভীষণ ভিড়ের ক্ষোভে বিস্তীর্ণ হাওয়ার স্বাদ পাই;
না হ’লে মনের বনে হরিণীকে জড়ায় ময়াল:
দণ্ডী সত্যাগ্রহে আমি সে রকম জীবনের করুণ আভাস
অনুভব করি; কোনও গ্লাসিয়ার-হিম স্তব্ধ কর্মোরেন্ট পাল-

বুঝিবে আমার কথা; জীবনের বিদ্যুৎ-কম্পাস্ অবসানে
তুষার-ধূসর ঘুম খাবে তারা মেরুসমুদ্রের মতো অনন্ত ব্যাদানে।

কবিতা। পৌষ ১৩৪৫