তেমনই নিজের মতো রয়ে গেছে

তেমনই নিজের মতো রয়ে গেছে এখানে বিকেলবেলা আজ
যেন কারু ঘড়ি থেকে প্রসন্ন বা বিরক্ত সময়
বার হয়ে তবুও নিজের পরিচয়
নিতে গিয়ে টের পেল এক বিন্দু মানবসমাজ
ব্যতীত সে আর কিছু নয়।

আমি ভাবি। অদ্ভুত আঁধার নাম আমার হৃদয়ে এসে জাগে
হাইনান, হোনান, কর্ফু, বার্সিলোনা, ডানকার্ক, ব্রেনার, থার্মপিলি
অথবা অনেক আগে মৃত এক মেয়ের গলার সরু নলি
বেহুলা’র- গঙ্গা-যমুনা’র মতো কী ক’রে তবুও এসে মিশেছে প্রয়াগে
অথবা মৃত্যুর মানে নিয়ে যারা করেছে অনেক দলাদলি

ধূসর ভূতের মতো একটি আঁধার গলি ধ’রে
সে-সব জনতা ধীরে চ’লে গেলে থেমেছে শব্দের বিধূনন
সে-সব মিছিল গোল হয়ে ঘোরে
যে-মানুষ এক বার আলোচনা ক’রে দেখেছিল হেঁট হয়ে ভেবে
মানুষের আশা তবু জেনে নেয় মানুষেরই মহৎ পৃথিবীতে

অনেক বিপথে হেঁটে তা হলে এ যেন এখানে নামাতে চায় ভার
স্বর্গ নরকের চোখে সম-ভাবে বিবেচনাধীন
বজেটের হাড় নিয়ে উতরোল কমিটি মিটিং
সেই লোক তবুও কোথায় পাবে নিজের ও অপরের তরে সারাৎসার
সাধারণ জনতার ঘোড়াগুলো হবে লঘুভার।

যদিও দরজা খোলে বিমোহিত পৃথিবীতে রোজ
সময় শতাব্দী তবু সেই সব বিলোড়িত ব্যবসায়ে যখন গিয়েছে কিছু পেকে
এখানে বিকেল কারু নাম ধ’রে ডেকে
কুটুম্বিনী মতো সঙ্ঘটিত হয়ে রোদে এমন সহজ
জলের দু’-এক মাইল বার ক’রে ফেলে গেল কোন এক ফাঁকে

আহ্নিক গতির মতো এ-পৃথিবী পড়ুয়ার হাতে
জিজ্ঞাসুর মতে এর দিন থেকে মানুষের দিন অনুভব
ক’রে শুধু ঘুরে যায় পুনরায় জীবনের অন্য উন্মেষের মতো এসে পড়ে সব
(অতীতের) ম্যামথের শেষ হলে মানুষের মন ক্রমে অনুভব করে
প্রতিজ্ঞাপাশের মতো আকাশের শেষে আরও অর্থ-গৌরব।




পরিবর্তিত হবার আগে কবিতাটি যেমন ছিল:

তেমনই নিজের মতো রয়ে গেছে এখানে বিকেলবেলা আজ
যেন কারু ঘড়ি থেকে প্রসন্ন বা বিরক্ত সময়
বার হয়ে তবুও নিজের পরিচয়
নিতে গিয়ে টের পেল এক বিন্দু মানবসমাজ
ব্যতীত সে আর কিছু নয়।

আমি ভাবি। অদ্ভুত আঁধার নাম আমার হৃদয়ে এসে জাগে
হাইনান, হোনান, কর্ফু, বার্সিলোনা, ডানকার্ক, ব্রেনার, থার্মপিলি
অথবা অনেক আগে মৃত এক মেয়ের গলার সরু নলি
অথবা একটি যুগ (ঠান্ডা মরণের মতো লাগে)
অথবা মৃত্যুর মানে নিয়ে যারা করেছে অনেক দলাদলি

ধূসর ভূতের মতো একটি আঁধার গলি ধ’রে
সে-সব জনতা ধীরে চ’লে গেছে বাতাসের শব্দের মতন
সে-সব মিছিল গোল হয়ে ঘোরে
যে-মানুষ এক বার বিজ্ঞ হয়েছিল তার মন
মায়াবশ রূপসির ম্লান আরশির মতো ঘোরে
এদের গোলকধাঁধা ঘিরে- আমরণ

এমন বিখ্যাত যুগে জন্ম, মৃত্যু, আরাধনা যার
শুরু হয়ে শেষ হয়ে যাবে এক দিন
স্বৰ্গনরকের চোখে সম-ভাবে বিবেচনাধীন
সেই লোক কোনও দিন কোনও দিকে পাবে না দুয়ার
বজেটের হাড় নিয়ে কমিটি মিটিং

যদিও দুয়ার খোলে আলোকিত পৃথিবীতে রোজ
শতাব্দীর সেই সব শোকাবহ সমস্যার থেকে
এখানে বিকেল নিজে কখন তোমাকে
ডেকে নিয়ে উঁচু ঘাসে- রোদের ধূসর রঙে এমন সহজ
অবলুপ্তি দিয়ে গেল তোমার ভাগ্যের দুর্বিপাকে

আজ তুমি বিকেলের ঘাস, পাতা, পাথরের শান্ত অনুশাসনের সাথে।
আমাদের কাছে কিছু দোষী- তবু দৈবের নিকটে
মহানুভবের মতো রয়ে গেছ মাইল মাইল বাস্তব স্বপ্নের সর্বঘটে
এক পা বাড়ায়ে আমি অনুভব ক’রে যাই পুনরায় এক পা বাড়াতে
আমাদের পৃথিবীরই ঘাস, পাখি, বিকেলের নিঃশব্দতা বটে।