তখন সকল প্রেম ম’রে যাবে

তখন সকল প্রেম ম’রে যাবে- সব প্রণয়ীরা
সূর্যাস্তের আভা আসে টের পেয়ে- সচকিত হরিয়াল পাখির মতন
অবসন্ন দীর্ঘ গ্রীবা সমান্তরালে রেখে- মিশে যাবে বাষ্পের ভিতরে
টের পাবে হেমন্তের সংস্কারে- হয়তো ইরান সিন্ধুর দিকে চ’লে গেছে
হয়তো-বা ত্রিভুজ নভের দিকে- বিস্ফারিত হেঁয়ালির মেঘে
হয়তো মৃত্যুর দিকে;- আমার এ চুপ- নিচু- মৃত্তিকার দেশে
শৈবাল হতেছে আরও ঋদ্ধ, কালো- নলখাগড়ার বনে নীড় আছে,
আকাঙ্ক্ষার মেধা

নদী নেই- অথবা সে নির্লোভ বায়ুর অস্পষ্টতা- অথবা সে জলপিপি
সব জল তার মৃত মসৃণ হিম এক নেউলের শরীরের ধূসরতা
তখন স্থবির আমি- তুমি- আমি;- ডানা ভেঙে গেছে ব’লে সেই
দূর ঔপনিবেশিক
সৌর উদযাপনে উড়িতে পারিনি মোরা সহোদর পাখিদের মতো
তখন নিস্তব্ধ মোরা- পাতার মতন, শামুকের মতো, পাথরের মতো
হেমন্তের রাত্রি এল ব’লে- বিপরীত প্রদীপের থেকে তবু ম্লান
আলো,- প্রতিকূল পর্দার পাশে- ধূসর অন্তিম ঘ্রাণ- নীরবতা নয় তবু
(আমাদের) যৌবনে রৌদ্রাক্ত দিন ছিল- লোভ ছিল- মনে হবে- আজও
ঘুমায়ে রয়েছে কে বা স্বর্ণশীর্ষ মনীষার মর্মর মেঝের ‘পরে
কেউ ঘুমে নেই;- আমাদেরও নিস্তব্ধতা বায়ু পাবে- পাঁজরের হিম হাসি
উষ্ণ হবে
মোম খেয়ে- যাহারা যেতেছে ম’রে- যাহারা গিয়েছে ম’রে- বহুদিন- পৃথিবীতে
সেই সব নিঃসম্বল ভূতের ভিতরে দু-একটা দানো ছিল- হয়তো-বা তুমি-
বেত্রবতী নদী যেন বানীরের বনে রুষ্ট- আলাপী পেঁচার মতো আমি
কথা কব, কথা কব সারা রাত- আবার বলিব গল্প জীবনের গভীর রগড়ে
নব-নব মৃত শিল্প, নষ্ট শস্য, অবিরল উজ্জীবিত ধূষ ইঁদুরের
নব-নব উন্মেষ শালিকী বুদ্ধি ব্যাপ্ত ইঁদুরের।