এক দিন মনে হ’ত জলের মতন তুমি।
সকালবেলার রোদে তোমর মুখের থেকে বিভা-
অথবা দুপুরবেলা- বিকেলের আসন্ন আলোয়-
চেয়ে আছে- চ’লে যায়- জলের প্রতিভা।
মনে হ’ত তীরের উপরে ব’সে থেকে।
আবিষ্ট পুকুর থেকে সিঙাড়ার ফল
কেউ-কেউ তুলে নিয়ে চ’লে গেলে- নিচে
তোমার মুখের মতন অবিকল
নির্জন জলের রং তাকায়ে রয়েছে;
স্থানান্তরিত হ’য়ে দিবসের আলোর ভিতরে
নিজের মুখের ঠাণ্ডা জলরেখা নিয়ে
পুনরায় শ্যাম পরগাছা সৃষ্টি করে;
এক পৃথিবীর রক্ত নিপতিত হ’য়ে গেছে জেনে
এক পৃথিবীর আলো সব দিকে নিভে যায় ব’লে
রঙিন সাপকে তার বুকের ভিতরে টেনে নেয়;
অপরাহ্ণে আকাশের রং ফিকে হ’লে।
তোমার বুকের ‘পরে আমাদের পৃথিবীর অমোঘ সকাল;
তোমার বুকের ‘পরে আমাদের বিকেলের রক্তিল বিন্যাস;
তোমার বুকের ‘পরে আমাদের পৃথিবীর রাত:
নদীর সাপিনী, লতা, বিলীন বিশ্বাস।
পরিচয় । বৈশাখ ১৩৪৮
[১৯৫৪ সালের সংস্করণে সংযোজিত]