তোমাকে

ভেবেছিলাম এ-কথা স্থির মেনে নিতে পারি:
নিউট্রন ও ইলেকট্রনের অন্ধ সাগরে
ওদেরই জাদুবলে তুমি হয়েছ আজ নারী;
ওদেরই দয়ার ফলে আমি প্রেমিক তোমার তরে।

তবু এ-ভুল হৃদয়ঙ্গম- মহাসৃষ্টির মানে
হয়তো ঠিক এমনভাবে উৎসারিত নয়।
তা যদি হ’ত তবে যেদিন নিজেরই পরামর্শে সজ্ঞানে
আমাকে তুমি দিয়েছিলে অব্যর্থ হৃদয়;

সে স্বাদ হয়ে যেত কি আজ হেমন্তে আবার ক্ষয়।
শীতের পড়ি-পড়ি বেলায় ফসল কেটে নিচ্ছে চাষা ঘরে;
নদীর বুকে প্রকৃতি জল রেখেছে, তবু রক্তের উদয়
এসে সবই আচ্ছাদিত করে।

এ-শতকে মানুষ নারী শূন্য হ’তে এসে
চলছে শূন্যে- আঁধার থেকে অপরিসীম আরও
অন্ধকারের ভেতর গিয়ে মেশে।
এ-ছাড়া কোনও সত্য নেই- উপায় নেই কারও।

এরই ভিতর অন্য এক গভীরতর নিরুপায়তা আছে;
মানুষ ও তার চিরস্থায়ী মানবছায়া ছাড়া
জানে না কেউ; প্রলম্বিত নীল আকাশের কাছে
কোনও দিনও পৌছুবে না কোনও সাড়া।

তবু সবই ঠিক হয়েছে; কবের আদি পৃথিবী থেকে তুমি
কত গ্লানি রক্ত আঁধার বিহ্বলতার থেকে
চলেছ আজও তিলধারণের মতন পটভূমি
দান না ক’রে- নিজেরই গালে সে তিলবিন্দু রেখে।

বর্ধমান। শারদীয় ১৩৬১