তোমার বুকের থেকে

তোমার বুকের থেকে একদিন চ’লে যাবে তোমার সন্তান
বাংলার বুক ছেড়ে চ’লে যাবে; যে ইঙ্গিতে নক্ষত্রও ঝরে,
আকাশের নীলাভ নরম বুক ছেড়ে দিয়ে হিমের ভিতরে
ডুবে যায়- কুয়াশায় ঝ’রে পড়ে দিকে-দিকে রূপশালী ধান
একদিন- হয়তো-বা নিমপেঁচা অন্ধকারে গা’বে তার গান,
আমারে কুড়ায়ে নেবে মেঠো ইঁদুরের মতো মরণের ঘরে-
হৃদয়ে ক্ষুদের গন্ধ লেগে আছে আকাঙ্ক্ষার- তবুও তো চোখের ‘পরে
নীল মৃত্যু উজাগর- বাঁকা চাঁদ, শূন্য মাঠ, শিশিরের ঘ্রাণ-

কখন মরণ আসে কে বা জানে- কালীদহে কখন যে ঝড়
কমলের নাল ভাঙে- ছিঁড়ে ফেলে গাংচিল শালিখের প্রাণ
জানি না ক’- তবু যেন মরি আমি এই মাঠ-ঘাটের ভিতর,
কৃষ্ণা যমুনায় নয়- যেন এই গাঙুড়ের ঢেউয়ের আঘ্রাণ
লেগে থাকে চোখে মুখে- রূপসী বাংলা যেন বুকের উপর
জেগে থাকে; তারি নীচে শুয়ে থাকি যেন আমি অর্ধনারীশ্বর।