উন্মেষ

কোথাও নদীর পারে সময়ের বুকে-
দাঁড়ায়ে রয়েছে আজও সাবেক-কালের এক স্তিমিত প্রাসাদ;
দেয়ালে একটি ছবি: বিচারসাপেক্ষ-ভাবে নৃসিংহ উঠেছে;
কোথাও মঙ্গল সংঘটন হ’য়ে যাবে অচিরাৎ।

নিবিড় রমণী তার জ্ঞানময় প্রেমিকের খোঁজে
অনেক মলিন যুগ- অনেক রক্তাক্ত যুগ সমুত্তীর্ণ ক’রে,
আজ এই সময়ের পারে এসে পুনরায় দেখে
আবহমানের ভাঁড় এসেছে গাধার পিঠে চ’ড়ে।

স্বাক্ষরের অক্ষরের অমেয় স্তূপের নিচে ব’সে থেকে যুগ
কোথাও সংগতি তবু পায় না ক’ তার;
ভারে কাটে- তথাপিও ধারে কাটে ব’লে
সমস্ত সমস্যা কেটে দেয় তরবার।

চোখের উপরে
রাত্রি ঝরে;
যে-দিকে তাকাই
কিছু নাই
রাত্রি ছাড়া;
অন্ধকার সমুদ্রের তিমির মতন
উদীচীর দিকে ভেসে যাই;
ম্যানিলা- হাওয়াই,
টাহিটির দ্বীপ,
কাছে এসে দূরে চ’লে যায়-
দূরতর দেশে।
কী এক অশেষ কাজ করেছিল তিমি;
সিন্ধুর রাত্রির জল এসে
মৃদু মর্মরিত জলে মিশে গিয়ে তাকে
বোর্নিওর সাগরের শেষে-
যেখানে বোর্নিও নেই- ম্লান আলাস্কাকে
ডাকে।

যত দূর যেতে হয়
তত দূর অবাচীর অন্ধকারে গিয়ে
তিমির-শিকারী এক নাবিককে আমি
ফেলেছি হারায়ে;
তিমির-পিপাসী এক রমণীকে আমি
হারায়ে ফেলেছি;
কোথায় রয়েছি-
জীব হ’য়ে কবে
ভূমিষ্ঠ হয়েছি।
এই তো জীবন:
সমুদ্রের অন্ধকারে প্রবেশাধিকারে;
নিপট আঁধার;
ভালো বুঝে পুনরায়
সাগরের সৎ অন্ধকারে নিষ্ক্রমণ।
সবই আজও প্রতিশ্রুতি, তাই
দোষ হ’য়ে সব
হ’য়ে গেছে গুণ।
বেবুনের রাত্রি নয় তার হৃদয়ের
রাত্রির বেবুন।

নিরুক্ত। পৌষ ১৩৪৮