উড়ুক্কু মাছের নাচে

উড়ুক্কু মাছের নাচে উৎফুল্ল বেগুনি এক সমুদ্রের পারে
একাকী দাঁড়ায়ে থেকে, বয়সে বিক্ষত হয়ে আজ,
কোনও এক চীন-দার্শনিক ভাবে- কোথাও রয়েছে যেন ঢের
উপদ্বীপ;- অনেক ভূখণ্ড আছে বিস্তীর্ণ সূর্যের বিম্বে হেসে
মরুর বালির মতো জ্ব’লে ওঠে গহন শটিত সব সমুদ্রের পারে
সেইখানে কারা আছে?- এক-দিন কনফুশিয়াস ছিল পৃথিবীতে
ঢের উপদেশ দিয়ে চ’লে গেছে দীর্ঘ এক পথিকের মতো
বিকেলবেলার সাদা শান্ত রোদ ধ’রে গোল নরম সূর্যের
জানালার ভিতরে সে মিশে গেছে- গেলাসে জলের বিম্বে আজও
প্রতিটি নতুন ভোরে পরিহাস ক’রে যায় পারদের মতো
নিরাময় উজ্জ্বলতা তার; সেলাইয়ের ফোঁড়ের মতন ঘুরে সূর্যের কিরণ
কাঁচ ফাঁড়ে; বিচূর্ণ কাঁচের পাত্র মৌমাছির মতো গুঞ্জরণে
ঘাসের উপরে ঝরে; হৃদয়ও জলের মতো;- অন্ধকার
নদীর উপরে জানু গেড়ে নিয়ে অবিরল নিটোল কাঁচের
কাঁচের- কাঁচের মূর্তি;- ভেঙে পড়ে অবলঙ্ লঘু বাতাসের
ঠোনা খেয়ে; চেয়ে দেখি কাঁচের কণায় ধৃত সূর্য সারা-দিন
সবুজ গোধিকা, মাছি, গহ্বরের সাপিনীকে এনে
অভিভূত ক’রে রাখে;- আমারও ভাতের কাঠি ফেলে রেখে ঘাসে
চেয়ে থাকি: বই, পাতা, কামান, কুকুর, মৃত্যু, সময়ঘড়ির
অত্যুক্তিকে ভুলে গিয়ে;- এখনও কী কথা আছে, হে কঠিন
মরুবালি, সিলিকন, সূর্যের আলোর গুঁড়ো, কাঁচের অনল?
আদি আরণির দিন শেষ হলে তার পর এই সব স্ফুলিঙ্গ-প্রতিভূ
প’ড়ে থাকে? জানি আমি অনেক ভূখণ্ড আছে দিগন্তরে আজও
ঘড়ির বিকেলে দীপ্ত- সমুদ্রের রঙে প্রিয়- বিমূঢ় ভারুই-দম্পতির
প্রথম ডিমের মতো তাহাদের রূপ যেন মিনারের অরণ্যের ভিড়ে
পাম- বীচ- কনিফার’এ- গাধার দুধের মতো সাদা শান্ত অকৃত্রিম হাতে
নারীদের নগ্ন হাতে- যেন মানুষের স্বর্গ তিন ধনু দূরে
রয়ে গেছে;- তবুও বিকেলবেলা তাহাদের প্রভাতের ঘুম
ভেঙে যায়; রাত্রি আসে; তবু কোনও ঘুমাবার লোক নাই।