ভয় ভুল মৃত্যু গ্লানি

ভয় ভুল মৃত্যু গ্লানি সমাচ্ছন্ন পৃথিবীতে আজ
দিন শেষ হ’য়ে যায়- রাত্রি আসে-
দিন নেমে আসে-
জ্ঞান আছে, তবু তার সে রকম প্রচলন নেই
প্রেম আছে- তবু যে প্রেরণা
কামনার চেয়ে তাকে উজ্জ্বলতায়
সকলের সাধারণ প্রয়োজনে দান করে
সেই প্রেম ফুরিয়ে এসেছে প্রায়।

একটি পৃথিবী নষ্ট হ’য়ে গেলে এ-বারে মানুষ
চেয়ে দেখে আর-এক পৃথিবী বুঝি ধ্বংসপ্রায়;
লোভ থেকে লোভে তবু- ভুল থেকে ভুলে
শূন্যতার থেকে আরও অবিকল শূন্যতার দিকে
আবর্ত ক্রমেই আরও দ্রুত হ’য়ে আসে।

বেলা প’ড়ে গেলে পশ্চিমের
মেঘের ভিতরে যেই আভা লেগে থাকে কিছু ক্ষণ
সে-দিকে সম্পূর্ণ চোখে তাকাবার মতো লোক নেই,
যে আলো ঠিকরে ওঠে ভোরে
পথে মাঠে জানালার ভাঙা কাচে
রক্তে শূন্যে বচনে ও নিহতবচনে
তারও কোনও মানে নেই মানুষের মনে।
ক্লান্তি আছে- শীত আছে
অন্তহীন মৃত্যু র’য়ে গেছে।
বারবার দৃশ্য মুছে ফেলে
মৃত্তিকার নির্জনতাকে শুধু সাক্ষী রেখে
নতুন আভাস আলো পটভূমি জাগিয়ে জাগিয়ে
কাজ ক’রে চলেছে সময় মনে হয়;
মৃত্যু যেন মৃত্যুর ভিতরে শুধু নির্লিপ্ত নয়;
কেবলই ব্যক্তির মৃত্যু হয়- তবু সময়ের কাছে
মানব ও মানবতা শাশ্বত কাহিনী হ’য়ে আছে।
ওরা মরে- ফিরে আসে- নতুন চেতনা এনে দেয়
যেন তা অনাদিকাল থেকে শুধু অগণন গ্লানি ক্ষয় শব
অন্ধকারে ব’য়ে তবু মহাজিজ্ঞাসার মর্মে উজ্জ্বল মানব।

প্রতিক্ষণ। মাঘ ১৩৯১