উইকএন্ড টিকিটের জোরে

উইকএন্ড টিকিটের জোরে
আবার গ্রামের পথে ফিরে চ’লে আসি
শহরের উত্তেজনাবশে যেন গভীর অম্ল হয়েছিল
তা ছাড়া বৃহৎ অন্ত্রে ঢুকে আছে বৈধ সাঁড়াশি

প্রান্তরের পারে এই নিমতিতা জ্যোৎস্নায়
কেউ-কেউ চির-কাল থেকে যায় গ্রামে
বেতালসিদ্ধের মতো আমি যেন তার
আমার ঠোঁটের ফুঁয়ে তারা সব প্রান্তরের পথে এসে নামে

বহু দিন মনে ছিল না ক’ সেই সুখময় ঘোষাল’এর নাম
তবু দেখি- অতর্কিতে- আজও বেঁচে আছে
সাড়ে-পাঁচ হাত তার উঁচু দেহ, মুক্ত আত্মা নিয়ে
তবু তারে দেখাতেছে ভীষণ ফ্যাকাশে

বাঘের নখের মতো বাঁকা ক্রূর চাঁদের আলোয়
মনে হয় হারায়ে ফেলেছে যেন পিতৃলোকদের তরবার
অথবা মূর্খতা কিছু র’য়ে যায় বহু দিন বেঁচে থেকে
জীবের আত্মা যদি খেয়ে ফেলে শেয়াল হুড়ার

ধরিতে পারে নি তার এত উঁচু দেহকে সে হাতের তেলোয় কোনও দিন
ঔপনিষদিক রবারের মতো অবহেলে
তবুও চাঁদের দিকে ইঙ্গিত ক’রে তাকে টেনে নিল যতই সময়
গ্রামের মেধাবীতমা দেবতারা দিল তাকে মাইল-মাইল রসাতলে ঠেলে

তবুও সে শার্ঙ্গরব, অগ্নিবর্ণ, নাগার্জুন ছিল এক দিন
হয়তো অনেক সুতো ছেড়ে দিয়ে এত দিনে হয়ে গেছে বৈশম্পায়ন
যখন সে হেঁটে চলে- কোনও দিকে হেঁটে চ’লে যেতে হবে ব’লে
মনে হয় মাটি হাঁটে- মানুষটা স্থির; বিখ্যাত বিষয় নিয়ে মগ্ন তার মন

আর তার সরোজিনী-
কুরুরমণীর মতো মেধা তার আজ আর নয়
বরং সে বড়ো গোল ভাসা চাঁদে যা কিছু তামাশা
দিতেছে উর্বর এক ভুট্টাখেতের পরিচয়

তবু আমি শহরের শূন্য জানালায় ঢের দিন
এই দু’টি মানুষকে জীবনের মরু ডিম ফিতা দিয়ে মেপে
ইহাদের সিন্ধুসারসের মতো অহঙ্কার ফিরায়ে দিয়েছি নীল
নির্নিমেষে- বিষুবরেখার ঊর্ধ্বে কুয়াশায়- দ্বিপদের মতন আক্ষেপে

আজ তবু কাশি আসে
মনে হয় হায়নাকে হেঁট ক’রে দেবে যেন মানুষের হাসি
যখন এ দুই জন স্ফীত এই পৃথিবীতে বহু দিন বেঁচে থেকে- থেকে
আমার পকেটে কালো মনিব্যাগ দেখেছিল- আজও আমার প্রত্যাশী।