গৃহবধূর ডায়েরি

আমার সবচেয়ে ভয় হয় ওই পাগলদের জন্যে ওই রাস্তার পাগলদের জন্যে ওই চটপরাদের জন্যে ওই জটপড়া চুলদাড়ি কিংবা ন্যাড়ামাথাদের জন্যে আমার সবচেয়ে ভয় হয় ওরা প্রত্যেক মুহূর্তে কত কত দূরে চলে যাচ্ছে বাড়ি ছেড়ে দেশ ছেড়ে ওদের কি বাপ-মা নেই ভাইবোন নেই কোন মেয়ে কি ওদের ভালবাসল না ওরা কাকে চড় মেরে কার হাত ছাড়িয়ে কোন শিকল ভোলা ঘরের জানলা টপকে একদিন দিগ্বিদিকে পালিয়ে যায়

যেভাবে উল্কা যায় আকাশে এক ঝলকমাত্র দেখা দেবার পর কিন্তু তারপরেও তো পড়তেই থাকে পড়তেই থাকে কালো আকাশের মধ্যে দিয়ে অদৃশ্য তেমনি ওরা কোন পানের দোকানের নীচে কোন বটতলায় কোন পার্কের বেঞ্চিতে নিঝুমপুর কোন প্লাটফর্মে এক ঝলক দেখা দিয়েও আসলে তো পালাতেই থাকে পালাতেই আমার সবচেয়ে ভয় হয় আমার ঘরের মানুষটাও যখন বলে এবার পাগল হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে যাব একদিন যদি সত্যিসত্যিই বেরিয়ে যায় মাথাগরম লোকটা যদি কোনো একটা পাগলের মধ্যে ঢুকে পড়ে রাগের মাথায় যদি ওর বদলে ওর পোশাক আর শরীর পরে সেই পাগলটা বাড়ি এসে বলে ভাত দাও বলে চান করবো তোমার সঙ্গে বলে ঘুমপাড়াও আমাকে তার শরীর চেনা কিন্তু নিঃশ্বাস অপরিচিত তাকানো অপরের ধক ধক অচেনা কোন বুনোর যদি ওইসময় ওই অত ভাললাগার মধ্যেও আমার হঠাৎ মনে হয়, এ কে? এ কে? যদি বুকের ওপর থেকে চুল খামচে মাথা উঠিয়ে বলতে হয় তুমি কে? তুমি কে? কিংবা যদি ভাল লাগতে লাগতে ভুলেই যাই এ অন্য কেউ তখন আমার লোকটা কোথায় শীতের মধ্যে ঘুরে বেড়াবে কোন প্লাটফর্মে কোন বটগাছতলায় কোন বন্ধ দোকানের নীচে কিংবা কোন অভাগিনীর ঝুপড়ির মুখে এসে খসে পড়বে আর পড়তেই থাকবে পড়তেই কালো আকাশের মধ্যে দিয়ে যেমন উল্কা যায় সারা শরীর ভরা ঘুম নিয়ে তার কিছুই তো জানতে পারব না আমি এই ভয়ে এই সবচেয়ে ভয়ে ঘামে ভিজে গিয়ে ঘুম ভেঙে মাঝরাত্তিরে আমি উঠে বসি বিছানায়….




[এটি গ্রন্থে এভাবে গদ্য আকারে লিখা হয়েছে]