আমি কী সুখে লো গৃহে রবো।
আমার শ্যাম হলো যদি যোগী ওলো সখি
আমিও যোগিনী হব।।
সে আমারই ধেয়ান করিত গো সদা
তার সে ধ্যান ভাঙিল যদি,
ওলো সে ভোলে ভুলুক, আমি ঐ রূপ
ধেয়াইব নিরবধি।
আমিও যোগিনী হবো!
শ্যাম যে তরুর তলে বসিবে লো ধ্যানে
সেথা আঁচল বিছায়ে রবো।
আমি ধূলায় বসতে দেবো না সই,
তার সোনার অঙ্গ মলিন হবে
ধূলায় বসতে দেবো না সই।
কুয়াশায় চাঁদ পড়বে ঢাকা
সহিতে পারিব না সই।
ধূলাই যদি সে মাগে,
আমি আপনি হইব রাঙা পথ-ধূলি
বঁধুয়ার অনুরাগে।
শ্যাম যে পথ দিয়ে চলে যাবে
সেই পথের ধূলি হব।
সে চলে যেতে দলে যাবে
সেই সুখে গো ধূলি হব।
হব ভিক্ষার ঝুলি, শ্যাম লবে তুলি
বাহুতে আমারে জড়ায়ে,
আমার বেদনা-গৈরিক-রাঙা
বাস দেব তারে পরায়ে।
নবীন যোগীরে সাজাইব আমি,
আমার প্রাণের গোধূলি-বেলার
রঙে রঙে তারে সাজাইব অমি।
সখি তার অনাদর-আগুনে জ্বালায়ে
পোড়াব লাবণি মোর,
ওলো তারির হাতের আঘাতে আঘাতে
হবে এ দেহ কঠোর।
আমার এ তনু শুকাবে গভীর অভিমানের জ্বালা,
আমি তাই দিয়ে তার হব গলায় রুদ্রাক্ষেরই মালা।
আমি শ্যামের গলার মালা হব,
আমি জীবনে পেয়েছি জ্বালা শুধু সখি,
মরে এবার মালা হব।
আমার চোখের জলে বইবে নদী,
আমি নদী হয়ে কেঁদে যাব
চরণে তার নিরবধি।
আমি কি সুখে লো গৃহে রবো,
আমার শ্যাম হলো যদি যোগী ওলো সখি
আমিও যোগিনী হব।।
[কীর্তন]