দীওয়ান-ই-হাফিজ

ত্যাজি মসজিদ কাল মুর্শিদ মম আস্তানা নিল মদশালা,
নেবে কোন পথ এবে পথ-রথ ওগো সুহৃদ সখি
পথ বালা!
আমি মুসাফির যত শারাবির ঐ খারাবির পথ-মঞ্জিলে,
সখি মাফ চাই, বিধি এই রায় ভালো লিখেছিলে
আমি জন্মিলে।
‘কাবা শরিফের পানে করি ফের মুখ কোন বলে আমি
কও সখি,
পীর শারাবের পথ-মদরত যবে, আন-পথে যারে
শিষ্য কি?
জ্ঞান বোঝে যদি কেন বাঁধি হৃদি প্রিয়া-কুন্তল-ফাঁদে
সেধে সেধে,
যত জ্ঞানী পীর ঐ জিঞ্জির লাগি, দিওয়ানা হবে গো
কেঁদে কেঁদে।
মম ঠোঁটে ও গো বধূ ‘আয়েত’-মধু যে ঢালে তব মুখ
‘কোর-আনে’,
তাই সুধা আর সীধু ফেটে পড়ে শুধু কবিতাতে আর
মোর গানে।
মম অগ্নি-বর্ষী ‘আহা’ শ্বাস আর একা-রাতে জাগা
কাতরানি।
তব মর্মর-মোড়া মর্মে কি দিল ব্যথা আঁকি কোনো
রাত বাণী!
মম-ময়ূরী লাগি’ ‘বিরহ-ভুজগী ফেঁসেছিল ভালো
কেশ-জালে
কেন খুলে দিয়ে বেণী ‘বিছেদ’-ফণী ছেড়ে দিলে প্রিয়া
শেষকালে!
তব এলোচুলে বায়ু গেল বুলে মম আলো নিভে গেল
আঁধিয়ারে,
ঐ কালোকেশে আমি ভালোবেসে শেষে দেশে দেশে
ফিরি কাঁদিয়ারে;
মোর বুক ফাটা ‘উহু’-চিৎকার-বাণ চক্কর মারে নভ চিরে,
দেখো হুঁশিয়ার মম প্রিয়তম, তীর-বাজ পাখি উড়ে
তব শিরে!
মোর জ্ঞানী পীর আজ খারাবির পথে, এসো মোর সাথী
পথ-বালা,
ঐ হাফিজের মতো আমাদেরো পথ প্রেম-শিরাজীরই
মদশালা!