যে দুর্দিনের নেমেছে বাদল

যে দুর্দিনের নেমেছে বাদল তাহারই বজ্র শিরে ধরি’
ঝড়ের বন্ধু আঁধার নিশীথে ভাসায়েছি মোরা ভাঙা তরী।।

মোদের পথের ইঙ্গিত ঝলে বাঁকা বিদ্যুতে কালো-মেঘে,
মরু-পথে জাগে নব অঙ্কুর মোদের চলার ছোঁয়া লেগে,
মোদের মন্ত্রে গোরস্থানের আঁধারে ওঠে গো প্রাণ জেগে,
দীপ-শলাকার মতো মোরা ফিরি ঘরে ঘরে আলো সঞ্চরি।।

নবজীবনের ‘ফোরাত’-কূলে গো কাঁদে ‘কারবালা’ তৃষ্ণাতুর,
ঊর্ধ্বে শোষণ-সূর্য, নিম্নে তপ্ত বালুকা ব্যথা-মরুর।
ঘিরিয়া য়ুরোপ- ‘এজিদের’ সেনা এপার ওপার নিকট দূর,
এরই মাঝে মোরা ‘আব্বাস’ সম পানি আনি প্রাণ পণ করি’।।
যখন জালিম্ ‘ফেরাউন’ চাহে ‘মুসা’ ও সত্যে মারিতে ভাই,
নীল দরিয়ার মোরা তরঙ্গ, বন্যা আনিয়া তারে ডুবাই,
আজো ‘নমরুদ’ ‘ইব্রাহিমে’রে মারিতে চাহিছে সর্বদাই,
আনন্দ-দূত মোরা সে আগুনে ফোটাই পুষ্প-মঞ্জরী।।

ভরসার গান শুনাই আমরা ভয়ের ভূতের এই দেশে,
জরা-জীর্ণেরে যৌবন দিয়া সাজাই নবীন বর-বেশে।
মোদের আশায় ঊষার রঙে গো রাতের অশ্রু যায় ভেসে,
মশাল জ্বালিয়া আলোকিত করি ঝড়ের নিশীথ-শর্বরী।।

নূতন দিনের নব যাত্রীরা চলিবে বলিয়া এই পথে
বিছাইয়া যাই আমাদের প্রাণ, সুখ, দুখ, সব আজি হ’তে।
ভবিষ্যতের স্বাধীন-পতাকা উড়িবে যে দিন জয়-রথে
আমরা হাসিব দূর তারা-লোকে ওগো তোমাদের সুখ স্মরি’।।

[ইমন-বেলাওল- তেওড়া]


[এটি ‘সন্ধ্যা’ কাব্যগ্রন্থে ‘তরুণের গান’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে। তবে সেটি কবিতা হওয়ায় ভিন্নতা রয়েছে]