মরমি

কোন মরমীর মরম-ব্যথা আমার বুকে বেদনা হানে,
জানি গো, সেও জানেই জানে।
আমি কাঁদি তাইতে যে তার ডাগর চোখে অশ্রু আনে,
বুঝেছি তা প্রাণের টানে।।

বাইরে বাঁধি মনকে যত
ততই বাড়ে মর্ম-ক্ষত
মোর সে ক্ষত ব্যথার মতো
বাজে গিয়ে তারও প্রাণে,
কে কয়ে যায় হিয়ার কানে।।

উদাস বায়ু ধানের খেতে ঘনায় যখন সাঁঝের মায়া,
দুই জনারই নয়ন-পাতায় অমনি নামে কাজল-ছায়া!

দুইটি হিয়াই কেমন কেমন
বদ্ধ ভ্রমর পদ্মে যেমন,
হায়, অসহায় মূকের বেদন
বাজল শুধু সাঁঝের গানে,
পুবের বায়ুর হুতাশ তানে।।

[বরিশাল, আশ্বিন ১৩২৭]

১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে দুর্গাপূজা উপলক্ষে ‘নবযুগ’ পত্রিকার অফিস ছুটি হয়ে যায়। এই ছুটি কাটানোর জন্য অক্টোবরের ১-২ তারিখে (রবি-সোম, ১৫-১৬ আশ্বিন) নজরুল এবং মুজাফ্ফর আহমদ বরিশালে শের-এ-বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকের ভাগ্নে ওয়াজির জালী ও ইউসুফ আলীর বাড়িতে যান। এই সময় এই কবিতটি রচনা করেছিলেন। কবিতাটিকে সুরারোপিত করে গানে পরিণত করা হয়েছিল।