কেন নামে হায় ডাব তোমায়
নাফন-জানা অনামিকা।
জলে স্থলে গগন-তলে
তোমার মধুর নাম যে লিখা।।
গ্রীষ্মে কনক-চাঁপার ফুলে
তোমার নামের আভাস দুলে,
ছড়িয়ে আছে বকুল মূলে
তোমার নাম হে ক্ষণিকা।।
বর্ষা বলে অশ্রুজলের মানিনী সে বিরহিণী।
আকাশ বলে, তড়িত লতা, ধরিত্রী কয় চাতকিনী!’
আষাঢ় মেঘে রাখলো ঢাকি
নাম যে তোমার কাজল আঁখি,
শ্রাবণ বলে, জুঁই বেলা কি?
কেকা বলে মালবিকা।।
শারদ-প্রাতে কমলবনে তোমার নামের মধু পিয়ে
বাণীদেবীর বীণার সুরে ভ্রমর বেড়ায় গুণ গুনিয়ে!
তোমার নামের মিলমিলিয়ে
ঝিল ওঠে গো ঝিলমিলিয়ে
আশ্বিনে কয়, তার যে বিয়ে
গায়ে হলুদ শেফালিকা।
নদীর তীরে বেণুর সুরে তোমার নামের মায়া ঘনায়,
করুণ আকাশ গলে তোমার নাম ঝরে নীহার কণায়।।
আমন ধানের মঞ্জরিতে
নাম গাঁথা যে ছন্দ গীতে
হৈমন্তী ঝিম নিশীথে
তারায় জ্বলে নামের শিখা।।
ছায়া পথের কুহেলিকায় তোমার নামের রেণু মাখা,
ম্লান মাধুরী ইন্দুলেখায় তোমার নামের তিলক আঁকা।
তোমার নামে হয়ে উদাস
ধুমল হোলো বিমল আকাশ
কাঁদে শীতের হিমেল বাতাস
কোথায় সুদূর নীহারিকা।।
তোমার নামের শত-নারী বনভূমির গলায় দোলে
জপ শুনেছি তোমার নামের মুর্হুমুর্হু কুহুর বোলে।
দুলালচাঁপার পাতার কোলে
তোমার নামের মুকুল দোলে
কৃষ্ণচূড়া, হেনা বলে,
চির চেনা সে রাধিকা।।
বিশ্ব রমা সৃষ্টি জুড়ে তোমার নামের আরাধনা
জড়িয়ে তোমার নামাবলী হৃদয় করে যোগসাধনা।
তোমায় নামের আবেগ নিয়া
সিন্ধু ওঠে হিল্লোলীয়া
সমীরণের মর্মরিয়া
ফেরে তোমার নাম- গীতিকা।।