বেলা-শেষে উদাস পথিক ভাবে,
সে যেন কোন অনেক দূরে যাবে-
উদাস পথিক ভাবে।
‘ঘরে এস’ সন্ধ্যা সবায় ডাকে,
‘নয় তোরে নয়’ বলে একা তাকে;
পথের পথিক পথেই বসে থাকে,
জানে না সে কে তাহারে চাবে।
উদাস পথিক ভাবে।
বনের ছায়া গভীর ভালোবেসে
আঁধার মাথায় দিগবধূদের কেশে,
ডাকতে বুঝি শ্যামল মেঘের দেশে
শৈলমূলে শৈলবালা নাবে-
উদাস পথিক ভাবে।
বাতি আনি রাতি আনার প্রীতি,
বধূর বুকে গোপন সুখের ভীতি,
বিজন ঘরে এখন সে গায় গীতি,
একলা থাকার গানখানি সে গাবে-
উদাস পথিক ভাবে।
হঠাৎ তাহার পথের রেখা হারায়
গহন বাঁধায় আঁধার-বাঁধা কারায়,
পথ-চাওয়া তার কাঁদে তারায় তারায়
আর কি পূবের পথের দেখা পাবে-
উদাস পথিক ভাবে।
১৩২৯ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন মাসের (ফেব্রুয়ারি-মার্চ ১৯২৩) পুরো সময়টুকু আলিপুর জেলে কাটান। এই সময় তাঁর রচিত প্রবাসী পত্রিকার ফাল্গুন ১৩২৯ সংখ্যায় ‘পথহারা’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল। [পৃষ্ঠা: ২৭৭]।