প্রতিবেশিনী

আমার ঘরের পাশ দিয়ে সে চলত নিতুই সকাল-সাঁঝে।
আর এ পথে চলবে না সে সেই ব্যথা হায় বক্ষে বাজে।।

আমার দ্বারের কাছটিতে তার ফুটত লালী গালের টোলে,
টলত চরণ, চাউনি বিবশ, কাঁপত নয়ন-পাতার কোলে-
কুঁড়ি যেমন প্রথম খোলো গো!
কেউ কখনো কইনি কথা,
কেবল নিবিড় নীরবতা
সুর বাজাত অনাহতা
গোপন মরম-বীণার মাঝে।।

মূক পথের আজ বুক ফেটে যায় স্মরি তারি পায়ের পরশ
বুক-খসা তার আঁচর-চুমু,
রঙিন ধুলো পাংশু হলো, ঘাস শুকাল যেচে বাচাল
জোড়-পায়েলার রুমু-ঝুমু!

আজো আমার কাটবে গো দিন রোজই যেমন কাটত বেলা,
একলা বসে শূন্য ঘরে- তেমনি ঘাটে ভাসবে ভেলা
অবহেলা হেলা-ফেলায় গো!
শুধু সে আর তেমন কর
মন রবে না নেশায় ভরে
আসার আশায় সে কার তরে
সজাগ হয়ে সকল কাজে।

ডুকরে কাঁদে মন-কপোতী-
‘কোথায় সাথীর কূজন বাজে?
সে পা’র ভাষা কোথায় রাজে?’

[দেওঘর
মাঘ ১৩২৭]


সওগাত পত্রিকার মাঘ ১৩২৭ সংখ্যায় ‘বেদন-হারা’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল।