স্নেহ-ভীতু

ওরে এ কোন্ স্নেহ-সুরধুনী নামল আমার সাহারায়?
বক্ষে কাঁদার বান ডেকেছে, আজ হিয়া কূল না হারায়!
কণ্ঠে চেপে শুষ্ক তৃষা
মরুর সে পথ তপ্ত সীসা,
চলতে একা পাইনি দিশা ভাই;
বন্ধ নিশাস- একটু বাতাস!
এক ফোঁটা জল জহর-মিশা!-
মিথ্যা আশা, নাই সে নিশানা’ই!
হঠাৎ ও কার ছায়ার মায়া রে?-
যেন ডাক-নামে আজ গাল-ভরা ডাক ডাকছে কে ঐ মা-হারায়!

লক্ষ যুগের বক্ষ-ছাপা তুহিন হয়ে যে ব্যথা আর কথা ছিল ঘুমা,
কে সে ব্যথায় বুলায় পরশ রে?-
ওরে গলায় তুহিন কাহার কিরণ-তপ্ত সোহাগ-চুমা?
ওরে ও ভূত, লক্ষ্মী-ছাড়া,
হতভাগা, বাঁধন-হারা!
কোথায় ছুটিস! একটু দাঁড়া, হায়!
ঐ তো তোরে ডাকছে স্নেহ,
হাতছানি দেয় ঐ তো গেহ,-
কাঁদিস কেন পাগল-পারা তায়?
এত ডুকরে কিসের তিক্ত কাঁদন তোর?
অভিমানি! মুখ ফেরা দেখ্‌ যা পেয়েছিস্‌ তাও হারায়!
হায়, বুঝবে কে যে স্নেহের ছোঁয়ায় আমার বাণী রা হারায়।।

[দেওঘর
পৌষ ১৩২৭]

এটি মোহিনী সেনগুপ্তা-কৃত স্বরলিপি-সহ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ‘মোসলেম ভারত’ পত্রিকার ফাল্গুন ১৩২৭ (ফেব্রুয়ারি-মার্চ ১৯২১) সংখ্যায়।