সুরা ইনশিকাক

শুরু করিলাম শুভ নামেতে আল্লার,
করুণা কৃপার যাঁর নাই নাই পার।

(রোজ কিয়ামতে) যবে ফাটিবে আকাশ
হবে সে প্রভুর নিজ আজ্ঞাবহ দাস,-
এই উপযোগী করে গড়েছি তাহায়;
লাগিবে সে আকর্ষণ যখন ধরায়;
যাহা কিছু আছে তার মধ্যে ‘ফেলি’ তায়
হইয়া যাইবে শূন্য-গর্ভ সে, হায়!
মানিবে পৃথিবী আজ্ঞা তাহার খোদার,
এরি উপযোগী করে সৃজন যে তার।
তোমার খোদার পানে চলিতে, মানব!
তোমারে করিতে হবে চেষ্টা অসম্ভব।
তবে সে করিবে লাভ মিলন তাঁহার!-
মিলিবে ‘আমল-নামা’ ডান হাতে যার,
সহজে দিবে সে তার হিসাব নিকাশ,
হরষে ফিরিবে নিজ পরিজন পাশ।
যে পাবে আমল-নামা পশ্চাৎ পানে,
‘সর্বনাশ’ বলিয়া সে কাঁদিবে সেখানে।
পশিবে সে অগ্নিকুণ্ডে।-আত্মীয়-স্বজনে
বেষ্টিত ছিল সে যবে হরষিত মনে,
ধরিয়া লইয়াছিল মনে সে তাহার
ফিরিতে কখনো তারে হইবে না আর।
-তারে সর্বদা
দেখিতেছিলেন, নিশ্চয়, তার যে খোদা
সান্ধ্য-গগনে ওই গোধূলি-রাগের
শপথ করি আর যে তিমির রাতের,
যামিনী সংগ্রহ করে যত কিছু তার,
আর শপথ করি আমি পূর্ণ-চন্দ্রমার;-
নিশ্চয় তোমরা পৌঁছিবে পরে পরে
এক স্তর হতে পুনরায় অন্য স্তরে।
(অতএব) তাহাদের কী হয়েছে? তারা
বিশ্বাস করে না এ বিশ্বাস-হারা!
কোরান তাদের কাছে যবে পাঠ হয়,
(কেন) তাহারা সেজদা নাহি করে সে সময়!
অমান্য করে যারা তারাই আবার
সত্যে সে আরোপ করে তারাই মিথ্যার।
তাহারা পোষণ করে মনে যাহা যত,
আল্লাহ্ বিশেষরূপে তাহা অবগত।
-কঠোর দণ্ডের
অতএব দিয়ে রাখো সংবাদ তাদের।
(তবে) যাহারা ঈমান আনে, নেক কাজ করে,
অন্তহীন পুরষ্কার তাহাদের তরে।


সুরা ইনশিকাক

ইনশিকাফ- বিদারণ, ফাটিয়া যাওয়া।

এই সুরা মক্কা শরিফে অবতীর্ণ হয়। ইহাতে ২৫টি আয়াত, ১০৮টি শব্দ ও ৪৪৮টি অক্ষর আছে।

শানে-নজুল

কেয়ামতের সময় মানুষের যে ভীষণ অবস্থা হইবে তাহার বর্ণনা ও পুনর্জীবন লাভের কথা এই সুরায় প্রকটিত হইয়াছে। কেয়ামত ও পুনর্জীবন লাভের কথা ভাবিয়া মানুষ যাহাতে সৎকর্ম সম্পাদন করে এই উদ্দেশ্যেই এই সুরা অবতীর্ণ হইয়াছে।