ভাঙার গান

কারার ঐ লৌহ-কপাট
ভেঙ্গে ফেল, কর রে লোপাট
রক্ত-জমাট
শিকল-পূজার পাষাণ-বেদী!
ওরে ও তরুণ ঈশান!
বাজা তোর প্রলয়-বিষাণ!
ধ্বংস-নিশান
উঠুক প্রাচী-র প্রাচীর ভেদি।।


গাজনের বাজনা বাজা!
কে মালিক? কে সে রাজা?
কে দেয় সাজা
মুক্ত-স্বাধীন সত্যকে রে?
হা হা হা পায় যে হাসি,
ভগবান পরবে ফাঁসি?
সর্বনাশী
শিখায় এ হীন তথ্য কে রে?


ওরে ও-পাগ্লা ভোলা!
দেরে দে প্রলয়-দোলা
গারদগুলা
জোরসে ধরে হ্যাঁচকা টানে!

মার হাঁক হায়দরি হাঁক,
কাঁধে নে দুন্দুভি ঢাক
ডাক ওরে ডাক
মৃত্যুকে ডাক জীবন পানে!


নাচে ঐ কাল-বোশেখি,
কাটাবি কাল বসে কি?
দে রে দেখি
ভীম কারার ঐ ভিত্তি নাড়ি!
লাথি মার, ভাঙ রে তালা!
যত সব বন্দী-শালায়-
আগুন জ্বালা,
আগুন জ্বালা, ফেল উপাড়ি।

১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ-এর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ‘বাঙ্গলার কথা’ নামক একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। স্বদেশী ভাবপুষ্ট লেখা প্রকাশের জন্য, ব্রিটিশ-ভারতের পুলিশ ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই ডিসেম্বর পত্রিকার সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাশ-কে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়ে দেয়। তৎকালীন সরকার গানটিকে নিষিদ্ধ করেছিল। কবিতাকারে এই গানটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাঙ্গালার কথা’ পত্রিকার ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে ২০ শে জানুয়ারি। গান হিসেবে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে, কলম্বিয়া রেকর্ড কোম্পানি থেকে। রেকর্ড নম্বর জি.ই ৭৫০৬। নিতাই ঘটকের পরিচালনায় প্রকাশিত এই রেকর্ডের কণ্ঠশিল্পী ছিলেন গিরীন চক্রবর্তী। এরপর ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে এই গানটির দ্বিতীয় রেকর্ড প্রকাশ করে এইচ.এম.ভি। রেকর্ড নম্বর- এন. ৩১১৫২। এই গানটিরও শিল্পী ছিলেন গিরীন চক্রবর্তী। গানটি ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন’ চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত হয়েছিল।