আর কেনরে মন ঘুর বাহিরে

আর কেনরে মন ঘুর বাহিরে
চল না আপন অন্তরে।
বাইরে যার তত্ত্ব করো অবিরত
সেতো আজ্ঞাচক্র বিহারে।।

বামে ইড়া নাড়ি দক্ষিণে পিঙ্গলা
সেতো রজঃগুণে করিতেছে খেলা
মধ্যে শতগুণ সুষুম্না বিমলা
ধরো ধরো তারে সাদরে।।

কুলকুণ্ডলিনী শক্তি বায়ু বিকারে
অচৈতন্য হয়ে আছে মূলাধারে
গুরুদত্তা তত্ত্ব সাধনেরই জোরে
চেতন করো তাহারে।।

মূলাধার অবধি পঞ্চচক্রভেদী
লালন বলে আজ্ঞাচক্রে রয় নিরবধি
হেরিলে সে নিধি যাবে ভবব্যাধি
ভাসবি আনন্দসাগরে।।

(সাধকদেশ)

আজ্ঞাচক্র: কপালে দুই এর মধ্যস্থলে অবস্থিত এই চক্র পঞ্চতন্মাত্রা, ইন্দ্রিয়তত্ত্ব, চিত্ত এ মনের স্থান।
ইড়া, পিঙ্গলা, সুষুম্না: দেহের ত্রিনাড়ি ইড়া ভোগের নাড়ি, পিঙ্গলা ত্যাগের নাড়ি এবং সুষুম্না নিরাপক্ষ নাড়ি। সাধুগণ এ নাড়িগুলোকে যথাক্রমে চন্দ্র, সূর্য ও অগ্নিস্বরূপ বলে থাকেন।
কুলকুণ্ডলিনী শক্তি: মানবদেহের গুহ্যদেশ হতে দু আঙ্গুল উর্ধ্বে এবং লিঙ্গমূল হতে দু আঙ্গুল নিচে চার আঙ্গুল বিস্তৃত যোনিমণ্ডল আছে। তার উপর মূলধার পদ্ম অবস্থিত। এটি ঈষৎ রক্তবর্ণ ও চতুর্দল যুক্ত। এর মধ্যে ব্রহ্মনাড়ির রক্তবর্ণ কোটি সূর্যের তেজযুক্ত লিঙ্গ স্বয়ম্ভূ লিঙ্গ আছেন। তার গায়ে সাড়ে তিনবার বেষ্টন করে সর্পাকারে কুলকুণ্ডলিনী শক্তি বিরজিতা। এর মধ্যে নিহিত রয়েছেন চিৎশক্তি। তিনি নিজ পুচ্ছ নিজ মুখে দিয়ে সুষুম্না নাড়ির দ্বার রুদ্ধ করে রেখেছেন।