মন দেহের খবর না জানিলে

মন দেহের খবর না জানিলে
মানুষ রতন ধরা যায় না।
আপন দেহে মানুষ আছে
করো তাঁহার ঠিকানা।।

জীবাত্মা, ভূতাত্মা, পরমাত্মা,
আত্মারাম, আত্মারামেশ্বর দিয়ে পঞ্চমাত্মা
দড় হয় এদের চেনা।।

দলপদ্মে রঙ দেখলে পরে
তবেই চেনা যাবে আপনারে
অন্যে কী তাই বলবে তোরে
করো গুরুর সাধনা।।

ঘুমায় যখন এই মানুষে
মন মানুষ রয় দেশে দেশে
লালন বলে গতি পাই উদ্দিশে
এমন অমূল্য ধন দেখলে না।।

(সাধকদেশ)

পঞ্চমাত্রা: জীবাত্মা, ভূতাত্মা, পরমাত্মা, আত্মারাম ও আত্মারামেশ্বর। জীবাত্মা থাকেন ভাণ্ডে। মাটি, পানি, আগুন, বাতাস ও আকাশ-এ পথভূত থেকে ভাণ্ড বা দেহের সৃষ্টি। জীবাত্মা জীবশক্তি। এটি স্থূল জীব। জীবাত্মার কাজ হলো ভার হরণ করা। জীবাত্মা বশীভূত হয় লোভ ও মুক্তিতে। ভূতাত্মা বশীভূত হন লোভ ও মুক্তিসাধনার দ্বারা। ভূতাত্মার অবস্থান লিঙ্গমূলে। ভূতাত্মা বদ্ধ জীব। ভূতাত্মার আহার বহুভোজন। এর কাজ হলো ছয়রিপুকে বাড়িয়ে তোলা। ছয়রিপু ইন্দ্রিয়গুলোকে চেতনা দান করে। পরমাত্মা হলেন নানামত্র চিন্তা। এটি মায়াশক্তি। এর আহার হলো বায় ভক্ষণ। পরমাত্মা সূক্ষ্মজীব। আত্মারামের বাস হৃদয়দেশের দ্বাদশদল পদ্মে। এটি চিৎশক্তি। এর কম হলে হাস্যরস কথা, মান মর্যাদা রক্ষা করা। আত্মারামেশ্বর হলেন কৃষ্ণশক্তি, কণ্ঠের ষোড়শ দলপদ্মে বা উজ্জ্বল স্থান সহস্রদলপদ্মে। এটি মুক্তজীব। আরামেশ্বরের আহার হলো রসামৃত আস্বাদন।