অন্ধ

রাত্রি জিন্দাবাদ দিয়ে ওঠে কার নামে নক্ষত্রপুঞ্জের চলে
নীরব মিছিল,
শোকের পোশাক পরে গাছগুলি দলে দলে নেমে আসে
নগ্ন রাজপথে
পাতায় খোদিত ক্ষুব্ধ অসংখ্য স্লোগান!
সমস্ত আকাশ জুড়ে কী করুণ দীর্ঘ এপিটাফ
একা সে বিষন্ন কবি লেখে এই ছিন্ন শোকগাথা
একেকটি তারকার উজ্জ্বল অক্ষরে,
আমরা এমন অন্ধ কিছুই দেখি না!

স্মৃতির উদ্দেশে তার ফুটে ওঠে এতো বনফুল
নিবিড় বকুল ঝরে পড়ে
বুঝি তারই শুষ্ক মালা;
এমন শিশির ঝরে মানুষও কোনো শোকে তেমন কাঁদেনি
সারা বনভূমিময় বাজে দীৰ্ণ ব্যথিত রাগিণী,
আমরা নীরব তবু প্রতিবাদ জানায় প্রকৃতি!

নির্জনতা ভেদ করে এতো শব্দ, এতো কোলাহল
পায়ের পশ্চাতে আরো বহু পদধ্বনি
প্রতিটি প্রাসাদশীর্ষ অবনত হয়ে যেন ছুঁয়ে আছে
তার নিঃস্ব কবরের মাটি!
শস্যময় মাঠে কার প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে নাম
অবিরাম দেশী নৌকো পাল তুলে যায়
হাওয়ায় হাওয়ায় তার ভেসে ওঠে মুখ!

পাখিরা কেমন যেন শশাকে মুহ্যমান
কোনো গান শুনি না তাদের
বুঝি কোনো শোকগ্রস্ত পাখি তারস্বরে পাঠ করে
শোকের প্রস্তাব,
তার লতাগুলো কী গভীর মুদ্রিত ব্যানার!
আত্মার ভিতরে আত্মা কান পাতো, শোনো
তাকে দেয় জিন্দাবাদ!
পায়ের পেছনে আরো অনিঃশেষ পায়ের মিছিল
আমরা এমন অন্ধ কিছুই দেখি না!