(১)
বল গো সুধাই, ওগো সুধাই তোমায়,
আমি কি আশার গান গাহিব আবার?
হয়েছে কি চিত্ত তবে আর্দ্র করুণায়,
আজি চিরদিন পরে এবে দেবতার?
(২)
তুমি কি আদেশে তাঁরি আসিলে আজিকে
পবিত্র উদার স্বর্গ হইতে নামিয়া?
আজি হৃদয়ের মম যেন চারিদিকে
স্বর্গের আভাস মধু উঠিছে জাগিয়া!
পূর্ণিমার আলো-স্পর্শে সিন্ধুর হৃদয়ে
যেমন সুষমারাশি হয় উদ্ভাসিত।
(৩)
কোথা শতলক্ষ পুষ্প বিজন নিলয়ে
অকস্মাৎ হইয়া উঠেছে বিকসিত?
তাহারি সৌরভে যেন ভরিছে ভুবন;
আমারে তুলিছে হায় করিয়া ব্যাকুল!
চির অতৃপ্তিরে যেন করিয়া নূতন
আমারে কে যেন আজি করিছে বিভুল!
(৪)
যে পরশমণি তরে খুঁজিয়াছি হায়,
আজীবন,- আজীবন অশ্রান্ত সন্ধানে,
কতবার মরুমাঝে মৃগতৃষ্ণিকায়
মোহিত হয়েছি তার সংখ্যা কেবা জানে!
(৫)
অঙ্কিত এ বক্ষোমাঝে স্তরে, স্তরে, স্তরে,
নিরমম নিরাশার শত পদক্ষেপ;
সমস্ত হৃদয়দেশ সমাচ্ছন্ন ক’রে-
ক্ষতের উপরে শুধু ক্ষতের প্রলেপ!
(৬)
শতবার নিরাশায় দগ্ধ এ হৃদয়
গাবে কি আশার গান আর একবার?
বল তুমি একবার, ভুলে এতো নয়,
যে আদর্শ ধরিয়াছ নয়নে আমার?
(৭)
* * * *
তুচ্ছ এ ধূলির পৃথ্বী,- মনে আশা হয়
ওই আদর্শের বলে স্বৰ্গ হ’বে জয়।-
১৩০৫ সাল।