(১)
ওগো মৃত্যু! অকস্মাৎ আনিলে বহিয়া
স্বর্গের সন্দেশ একি মহা নিদারুণ!
মনোমোহনেরে নাকি চলিলে লইয়া,
অভাগী বঙ্গের ভালে জ্বালিয়া আগুন।
কিছু জানালে না আগে, দস্যুর মতন
প্রচণ্ড-ঝটিকা-বেগে আসিয়া সহসা,
লইলে হরিয়া মা’র অমূল্য রতন!
দলিয়া হৃদয়-ভরা বিশ্বাস ভরসা!
(২)
ওগো অভাগিনী মাতা! ললাটে তোমার
জানি না কত না দুঃখ লিখিয়াছে ধাতা!
আগ্রহে আশায় ল’বে আশ্ৰয় যাহার,
দেবের ‘উদ্যত বজ্ৰ’ সেথা আছে পাতা!-
(৩)
হে বিপন্ন দীন নিঃসম্বল নারী-নর!
উপায়বিহীন সবে হ’লে আজি হ’তে!
নির্ব্বাপিত আলো; অন্ধকার ঘনতর
সমাচ্ছন্ন তোমাদের অদৃষ্টের পথে!
(৪)
স্বর্গমুখী জনে আর কি বলিব হায়!
“যাও” বিনা শেষ কথা কি আছে বলার?
অবনত ক’রে শির মানব তথায়,
যেথায় শক্তির তার নাহি অধিকার!
ত্যজিয়া অনিত্য দেহ, মহিমা-মণ্ডিত-
হে স্বরগগামী আত্মা যাও তবে যাও!
সহস্ৰ সহস্ৰ নেত্ৰ- অশ্রুতে গ্রন্থিত-
অমূল্য বিদায়-মাল্য উপহার লও!
(৫)
হে স্বৰ্গনিবাসী সবে! নব আগন্তুকে,
বরণ করিয়া গৃহে লহ সকৌতুকে!-
কাৰ্ত্তিক। ১৩০৩ সাল।