চিনি না তবুও তোরে

চিনি না তবুও তোরে আমি বড় ভালবাসি;
অসীম উলঙ্গ ওই মহান্‌ সৌন্দর্য্যরাশি,-
যত দেখি তত আরো বাড়ে দেখিবার আশি,
না জানি মিটিবে কবে সুমধুর এ তিয়াষ।
এ সৌন্দর্য্যসাগরের আছে কি গো তল পার,
অথবা ভাসিয়া যাব, সাঁতারিব চিরকাল।
মিটাতে নারিবে যদি, পিয়াসা বাড়াবে বই,
তবে কেন দিলে দেখা আমারে সৌন্দর্য্যময়ী!
নিমেষে নিমেষে দেখি কত নব নব রূপ,
অতুল উপমাহীন সবি দেখি অপরূপ।
তোমায় ধরিতে যাই পাগল হইয়া যেন,
মিছে শুধু ছুটাছুটি ধরিতে পারি না কেন?
কোথায় তোমার অস্ত, দেখিতে পাইব কবে,
অথবা জীবন-ভরা শুধু খোঁজা সার হবে।
অথবা,- সমস্ত জীবন তোমা খুঁজিতে করিয়া ব্যয়-
হইয়া পড়িব যবে শ্রান্ত ক্লান্ত অতিশয়;
চরণ অবশ হবে চলিতে নারিব আর,
আঁখি হ’তে আলো মুছে হবে যবে অন্ধকার;
কাছে রহিবে না কেহ, লুটাব ধূলায় পড়ে,
তখন কি দেখা দেবে আমায় করুণা করে?
সস্নেহে বুলায়ে হাত শ্ৰান্ত ক্লান্ত দেহোপরি,
উঠাইবে ধূলি হ’তে আমারে কি হাত ধরি?
সাদরে চুম্বিয়া মুখে, আঁচলে মুছিয়া ধূলি,
প্রশাস্ত তোমার বুকে আমারে কি লবে তুলি?
রূপের আলায় তব ঘুচিবে আঁধার কালো,
পড়িবে আমারো বুকে নবজীবনের আলো।

৭ই কাৰ্ত্তিক, ১৩০১।